বিনোদন

আজ ‘ইত্যাদি’, শুটিং হয়েছে নেত্রকোনায়

আজ রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হবে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে অনুষ্ঠান ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বটি ধারণ করা হয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সাদা মাটির পাহাড়ের সামনে।

Advertisement

ফাগুন অডিও ভিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পাহাড় আর নৈসর্গিক দৃশ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাজানো মঞ্চে ধারণ করা হয় এবারের ইত্যাদি। অধিকাংশ সময়ই রাতের আলোকিত মঞ্চে ইত্যাদি ধারণ করা হলেও এই স্থানের নৈসর্গিক রূপ রাতের বেলায় দেখানো সম্ভব নয় বলে এবার দিনের আলোর পড়ন্ত আভায় ইত্যাদির ধারণ শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ধারণ করা হয় ১৩ সেপ্টেম্বর।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে নেত্রকোনায় ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে বসে জমজমাট মেলা। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় বেলা ২টা থেকেই আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল। আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অর্ধলক্ষাধিক মানুষ আশপাশের পাহাড়, গাছ ও লেকের পাড়ে দাঁড়িয়ে ইত্যাদির ধারণ উপভোগ করেন। ধারণ চলে রাত ১১টা পর্যন্ত।

এবারের অনুষ্ঠানে মাটি ও মানুষের শিল্পী নেত্রকোনার সন্তান কুদ্দুস বয়াতি এবং ইসলাম উদ্দিন পালাকার দুজনে একসঙ্গে তাদের পরিচিত ঢঙে নেত্রকোনা অঞ্চলের দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি। এছাড়া নেত্রকোনাকে নিয়ে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায়, হানিফ সংকেতের সুরে এবং মেহেদির সঙ্গীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন বিজয়পুরেরই স্থানীয় দুই শতাধিক গারো, হাজং এবং বাঙালি নৃত্যশিল্পী। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছেন মালা মার্থা আরেং, কণ্ঠ দিয়েছেন পুলক, তানজিনা রুমা, মোমিন বিশ্বাস ও নোশিন তাবাসসুম। গানটি চিত্রায়ণ করা হয়েছে দুর্গাপুরেরই কিছু মনোরম লোকেশনে।

Advertisement

দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান নেত্রকোনাকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে চারজন দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শব্দসৈনিক শিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলী। যার বাড়িও নেত্রকোনায়। নির্বাচিত দর্শক এবং আমন্ত্রিত শিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলী গেয়েছেন তার নিজের গাওয়া চারটি বহুশ্রুত জনপ্রিয় গানের অংশবিশেষ।

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ট্রেনের যাত্রী, গার্ড ও চালকের কাছে এক ভয়ংকর আতঙ্ক। এ বিষয়ে প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে একদল তরুণ-তরুণী। এবারের অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয় এই তরুণদের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম। রয়েছে মৌলভীবাজারের মানবিক মানুষ অমলেন্দু কুমার দাশের ওপর একটি মানবিক প্রতিবেদন।

এছাড়াও নেত্রকোনার মঞ্চে যথারীতি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে রয়েছে নানি-নাতির কথার মাতামাতি। নিয়মিত অন্যান্য পর্বসহ রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ্ণ নাট্যাংশ। টেলিভিশন প্রযুক্তির উন্নয়ন বনাম অনুষ্ঠানের মানের অবনমন, ইন্টারনেট আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব, ভুলে ভরা জীবন, সবিনয়ে আমন্ত্রণ-ক্রোধে প্রত্যাখ্যান, ভোট ভিখারি, ইউটিউবে টাকা কামানোর ধান্দা, সেলফি ভাইরাস, ননসেন্স মানুষের রাস্তায় হাঁটার লাইসেন্স, সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী, জীবনের ওপর ফাইলের চাপসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।

এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন সোলায়মান খোকা, শেলী আহসান, সুভাশীষ ভৌমিক, আঞ্জুমান আরা শিরিন, আবদুল্লাহ রানা, জিল্লুর রহমান, আমিন আজাদ, আনোয়ার শাহী, নজরুল ইসলাম, জামিল হোসেন, বিলু বড়ুয়া, জাহিদ শিকদার, মুকিত জাকারিয়া, শাহেদ আলী, আনন্দ খালেদ, সুজাত শিমুল, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি, সিয়াম নাসির, সাবরিনা নিসা, সাদিয়া তানজিন, সাজ্জাদ সাজু, সুবর্ণা মজুমদার, সিলভিয়া কুইয়া, মোনালিসা দীপা, মতিউর রহমান, দেবাশীষ মিঠু, বেলাল আহমেদ মুরাদসহ আরও অনেকে। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Advertisement

এমআই/বিএ/জিকেএস