রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সব মেগা প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ হয়েছে। জনগণ এর সুফল পেতে শুরু করেছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির দিকে, উন্নয়নের দিকে। সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে (আমরা) সেই অগ্রযাত্রায় শামিল হবো।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পাবনার সাঁথিয়ায় ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে সাঁথিয়ায় পৌরসভা সপ্তাহব্যাপী নৌকাবাইচের আয়োজন করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌকাবাইচ আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির একটি অনন্য ঐতিহ্য। বাংলার প্রতিটি আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি সঠিকভাবে লালন করা গেলে এগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যেরও অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। পাবনা জেলা বাঙালি লোক-সংস্কৃতির উর্বর ক্ষেত্র। নৌকাবাইচ আমাদের এলাকার তেমনই একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব।
Advertisement
পাবনার উন্নয়নে নতুন গতি এসেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ২০০৮ সালে পাবনায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও এতোদিনে কোনো হাসপাতাল ছিল না। আজ সকালেই পাবনার ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজের শুভ সূচনা করা হয়েছে। পাবনা থেকে ঢাকা রেল চলাচল এ মাসেই শুরু করার কথা থাকলেও প্রশাসনিক ও কারিগরি কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা শুরু হবে। এছাড়া ইছামতি নদী সংস্কার ও পুনঃখননের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি। তিনি বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আমৃত্যু লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাঙালিকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেছিলেন। সে লক্ষ্যে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সংবিধানও আমাদেরকে উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমরা জাতির পিতাকে হারাই। এটা ছিল জাতি হিসেবে আমাদের চরম ব্যর্থতা। কারণ আমরা তাকে ধরে রাখতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু আমাদের সঙ্গে না থাকলেও তার নীতি-আদর্শই বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার পথ-নির্দেশিকা ও অনুপ্রেরণা।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা, পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, পাবনা পৌরমেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধান, বেড়া মেয়র অ্যাডভোকেট আশিফ শামস রঞ্জন, সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন, সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী খান প্রমুখ।
Advertisement
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে ইছামতি নদীর দুই পাড়ে হাজার হাজার দর্শকের সমাগম ঘটে।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এসআর/জেআইএম