কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর খুনিদের বিচার দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে কুমিল্লা মহানগরী। মাঠে নেমেছে ভিক্টোরিয়া ও সরকারি মহিলা কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা নগরীতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে দুপুরে কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে গিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এসময় নগরীতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে।কান্দিরপাড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে এসে দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ, কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রব। এসময় তারা অবিলম্বে অপরাধীদের শনাক্ত করার আশ্বাস দেন।শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানান সাংস্কৃতিক সংগঠক শহীদুল হক স্বপন, দক্ষিণ জেলা যুবদল সভাপতি আমিরুজ্জামান আমির, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল সভাপতি উৎবাতুল বারী আবু, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আজিজ সিহানু, ছাত্রলীগ নেতা রোকন উদ্দিন ও শাওন প্রমুখ। ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সাবেক সভাপতি আল-আমিন বলেন, আমাদের সংগঠনের সদস্য ছিলো সোহাগী। তার হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সন্ধ্যায় নগরীর কান্দিরপাড়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানো হবে বলেও জানান তিনি।নিহতের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় টিউশনি করে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয় সোহাগী জাহান তনুকে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়নামতি সেনানিবাসের অভ্যন্তরে পাওয়ার হাউসের পানির ট্যাংক সংলগ্ন স্থানে সোহাগীর মরদেহ পাওয়া যায়। কালভার্টের পাশে ঝোপের ভেতর মাথা থেতলানো সোহাগীর অর্ধনগ্ন মরদেহ উদ্ধার করা হয়।সোমবার নিহতের বাবা ইয়ার হোসেন কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের চার দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার কিংবা হত্যার রহস্য উদ্ধার করতে পারেনি। তবে হত্যার রহস্য বের করতে পুলিশের একাধিক টিম ছাড়াও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি তদন্ত টিম এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সম্ভব্য কারণ চিহিৃত করতে বেশ কিছু ক্লু নিয়ে মাঠে অভিযান চালাচ্ছে বলে ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এদিকে, কুমিল্লা নগরী ছাড়াও তনুর গ্রামের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরের গ্রামবাসী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অপরদিকে, ঘাতকদের বিচারের দাবিতে জেলার চান্দিনা, দেবিদ্বার, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়নামতি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের করতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। তবে এখনো রহস্য বের করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি। কামাল উদ্দিন/এআরএ/পিআর
Advertisement