সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মিত হচ্ছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল (টার্মিনাল-৩)। আগামী ৭ অক্টোবর আংশিক উদ্বোধন করা হবে এ মেগা প্রকল্পের। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। এটা হলে বর্তমানের ৮০ লাখের জায়গায় বছরে শাহজালাল বিমানবন্দরে সেবা নিতে পারবে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ।
Advertisement
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, থার্ড টার্মিনালে থাকবে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ। প্রথম ধাপে চালু করা হবে ১২টি। থাকবে উড়োজাহাজ রাখার জন্য ৩৬টি পার্কিং বে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেকইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেকইন কাউন্টার। এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার। উন্নত হবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থাও।
আরও পড়ুন>> এক্সপ্রেসওয়ে-মেট্রোতে সরাসরি যুক্ত হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল
স্বয়ংক্রিয় চেকইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেকইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। এর বাইরে টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যবস্থা থাকবে এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের।
Advertisement
থার্ড টার্মিনালে অ্যাপ্রোন পার্কিং থাকবে মোট ৩৭টি। ফলে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে ট্যাক্সিওয়ে আছে চারটি। নতুন করে আরও দুটি হাই স্পিড ট্যাক্সিওয়ে যোগ হচ্ছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজ যাতে বেশি সময় থাকতে না হয়, সেজন্য তৈরি করা হচ্ছে নতুন দুটি ট্যাক্সিওয়ে। এছাড়া পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য দুটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>> বাণিজ্য বাড়াবে ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে বিমানবন্দরে ৮০ লাখ মানুষ সেবা নিচ্ছে। বিমানবন্দরটি যখন পুরোপুরি চালু হবে তখন এক কোটির বেশি মানুষ সেবা পাবে। স্বয়ংক্রিভাবে মানুষ সেবা নিতে পারবে। এটা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিমানবন্দর। ধীরে ধীরে বিমানবন্দরে সক্ষমতা বাড়বে। বর্তমানে নতুন নতুন অনেক এয়ারলাইন্স থার্ড টার্মিনাল ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করছে।’
শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। নতুন করে তিন হাজার কোটি টাকা বাড়লে প্রকল্পের ব্যয় হবে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি নির্মাণ শুরু হয়।
Advertisement
খরচের বেশিরভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
এমওএস/এএসএ/জিকেএস