মাদারীপুরের শকুনি এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ও রিমা বেগম দম্পতির মেয়ে আয়শা ইসলাম (৬)। ফুটফুটে এই শিশুটি যতই বড় হচ্ছে ততই বাড়ছে তার সমস্যা। পাঁচ বছর ধরে জমানো ও ধারদেনা করা টাকায় চিকিৎসা করিয়ে প্রায় নিঃস্ব তার বাবা-মা। এখন টাকার অভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এ শিশুটির চিকিৎসা।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইলেকট্রিক মিস্ত্রির সহযোগী আমিনুল ইসলামের বড় মেয়ে আয়শা। আফিয়া ইসলাম (৩) নামে তার আরেকটি মেয়ে রয়েছে। প্রতিদিন মিস্ত্রির কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। তবে আয়শার জন্মের এক বছর পর দেখা দেয় নানা সমস্যা। তখনই সবার চোখে পড়ে আয়শার বাকা পা। তখন থেকেই শুরু হয় চিকিৎসা।
আরও পড়ুন: ‘রাস্তায় বের হলে সবাই অন্যভাবে তাকায়, মনে হয় আমি মানুষ না’
চিকিৎসকের পরামর্শে আয়শাকে একটি জুতা কিনে দেওয়া হয়। ধারণা ছিল জুতা পরিয়ে রাখলে পায়ের পাতা আস্তে আস্তে সোজা হয়ে যাবে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তবে দুই বছর বয়সে আয়শা একটু একটু করে আয়শা হাঁটতে শুরু করে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সমস্যা বাড়ছে। তার ডান পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে দুর্বলতাসহ দেখা দেয় মানসিক সমস্যা। মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালসহ সরকারি ও প্রাইভেট নানা হাসপাতালে চিকিৎসা করান। এক পর্যায়ে জমানো টাকা শেষ হলে ধার দেনা করে চিকিৎসা করান। কিন্তু কোনো কিছুতেই এর প্রতিকার পাননি। বর্তমানে ভারতে নিয়ে চিকিৎসার কথা ভাবলেও টাকার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তারা সবার সহযোগিতা কামনা করছেন।
Advertisement
আয়শার বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, এক বছর বয়স থেকেই মেয়ের এ সমস্যা ধরা পড়ে। এরপর থেকে চিকিৎসা করতে গিয়ে আমরা একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। অনেকেই বলছেন ভারতে এ রোগের চিকিৎসা ভালো হয়। মেয়েকে একটু সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন দেওয়ার জন্য ভারতে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু সেই সামর্থ্য আমার নেই। সবাই একটু এগিয়ে আসলে আমার মেয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে। তা না হলে হয়তো আমার মেয়েটিকে এই কষ্টের জীবনই কাটাতে হবে। একটি অস্বাভাবিক জীবন নিয়ে সবার বোঝা হয়ে থাকতে হবে। আমি চাই আমার মেয়ে বোঝা না হয়ে, সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বাঁচার সুযোগ পাক।
আরও পড়ুন: টাকার অভাবে হচ্ছে না জরায়ুর অপারেশন, সাহায্য চান বৃদ্ধা
প্রতিবেশ মেহেদী হাসান বলেন, আমিনুলের মেয়েটি দেখতে খুবই সুন্দর। কিন্তু আস্তে আস্তে সে প্রতিবন্ধী হয়ে যাচ্ছে। ওর বাবা-মা অনেক কষ্ট করে এতদিন চিকিৎসা করেছেন। এখন আর তাদের একার পক্ষে সম্ভব না। তাই সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
মাদারীপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আফজাল হোসাইন বলেন, আমিনুল তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার ব্যাপারে একটি দরখাস্ত করলে সরকারিভাবে কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে।
Advertisement
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেএস/জেআইএম