সাহিত্য

অপরূপ শরতের সৌন্দর্যের মহিমা

স্নিগ্ধা শুক্লা

Advertisement

কেউ একজন বলেছেন, ‘শরতের চিঠি আসুক বা না আসুক, তবুও কাশফুল ফুটবে এই শহরে’। তবে এই শহরে কাশফুল ফোটে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায়। গ্রামবাংলায় কাশফুল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। নদীর ধারে, বিলের মাঝে, জলাশয়ের কিনারে দেখা মেলে কাশফুলের। তাই তো শরৎ এলেই কবি বলে ওঠেন,

‘শরৎ সেজেছে কাশফুলেথরে বিথরে বালুচরে,সাদা মেঘের বালুচর যেনউড়ছে, অপরূপ ওই নীলাম্বরে’(কাশকন্যা: এ কে সরকার শাওন)

আমাদের মাঝে এসেছে শরৎকাল। বর্ষা ঋতুর অবসানের পর আগমন ঘটে শুভ্র, স্নিগ্ধ শরৎ ঋতুর। ষড়ঋতুর অপরূপ সমারোহে শোভিত এই বাংলায় শরৎ যেন এক অপরূপ মোহনীয় ঋতু। শরৎ মানেই নীল দিগন্তে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। যা দেখতে সত্যিই মনোমুগ্ধকর। আকাশের রূপ ধরা দেয় অন্য আঙ্গিকে। কখনো শ্বেত শুভ্র আবার কখনো মেঘময় গড়ন। দিনভর আকাশের এই বৈচিত্র্যময় রূপ আমাদের মনকে করে প্রফুল্ল ও আনন্দিত। দিগন্তে ভাসমান মেঘের দল ছুটে চলে প্রতিনিয়ত দূর অজানা কোনো ঠিকানায়। কখনোবা এই বৈচিত্র্যময় মেঘমালা ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় বৃষ্টি রূপে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আয়শা সাথীর কবিতা: শরৎ ছোঁয়া

বাংলায় ভাদ্র ও আশ্বিন মাস মিলে শরৎকাল। ছয়টি ঋতুর তৃতীয় ঋতু এটি। শরৎকে ইংরেজিতে ‘অটাম’ বলা হয়। তবে উত্তর আমেরিকায় একে ‘ফল’ নামে চেনে সবাই। এই বাংলায় সেপ্টেম্বর মাসজুড়েই শরৎকালের স্নিগ্ধতা পাওয়া যায়। তবে উত্তর গোলার্ধে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ মাসে শরৎকাল। এই শরৎকালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাছের পাতা ঝরে যাওয়া।

শরৎকালের জ্যোৎস্নার পুলকিত মোহনীয় রূপ যেন আলাদা সৌন্দর্য দান করে। শরতের জ্যোৎস্নার সৌন্দর্য যে কোনো মানুষকেই বিমোহিত করে। তাই বুঝি কবি পরম যত্নে লিখেছেন,

‘শরতের হিম জোছনায়নিশীথিনী আকুল নয়নে চায়,বহুদিন পরে যেন পেয়েছে প্রণয়ী জনে অক্রুর লহরী মাখা সুখের আলোক ভার।’(শারদ-জ্যোৎস্নায়: স্বর্ণকুমারী দেবী)

Advertisement

শরৎ মানেই বৈচিত্র্যময় ফুলের সমাহার। শিউলি ফুলের ডালে ডালে কুঁড়ি ভরে যায়। টগর ফুলে ছেয়ে যায় পথ-ঘাটের ঝোঁপঝাড়। মালতি লতার ভাঁজে ভাঁজে মৌমাছি খেলা করে। নদীতীরে কাশফুলেরা মাথা উঁচু করে হেলেদুলে আমাদের স্বাগত জানায়। জানান দেয় সনাতনীদের দেবীর আগমনী বার্তা। ছাতিম, বকফুল, মিনজিরি, কলিয়েন্ড্রাসহ বৈচিত্র্যময় ফুলের সমাহার আমাদের শরৎ ঋতুকে রাঙিয়ে তোলে সৌন্দর্যের অপরূপ মহিমায়।

এসইউ/এমএস