দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত এলাকায় চীনের ভাসমান ব্যারিয়ার অপসারণে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে ফিলিপাইন। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এডুয়ার্ডো এম অ্যানো।
Advertisement
এর আগে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে দক্ষিণ চীন সাগরে ব্যারিয়ার স্থাপনের অভিযোগ তোলে ফিলিপাইন। দেশটির কোস্টগার্ডের মুখপাত্র জায়ে তারিয়েলা এক এক্স বার্তায় (পূর্বে টুইটার) বলেন, সাগরের স্কারবোরোফ শোল এলাকায় ভাসমান ব্যারিয়ার স্থাপন করার কারণে আমাদের দেশের মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে পারছে না।
সোমবারের বিবৃতিতে ফিলিপাইনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, চীনের এই ব্যারিয়ার স্থাপন আমাদের জনগণ ও জেলেদের মৌলিক অধিকার হরণের সামিল। চীনের এমন পদক্ষেপে আমাদের জেলেরা মাছ ধরার ঐতিহ্যগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা ২০১৬ সালের সালিসি রায়ে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা ওই ব্যারিয়ার অপসারণ ও জেলেদের অধিকার রক্কায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেবো।
এদিকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন পাল্টা জবাবে বলেছেন, স্কারবোরো শোল চীনের অন্তর্নিহিত অংশ ও এটিসহ আশেপাশের সমুদ্র অঞ্চলে চীনের ‘পূর্ণ সার্বভৌমত্ব’ রয়েছে।
Advertisement
গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন সাগরের স্কারবোরো শোলের প্রবেশপথজুড়ে একটি ৩০০ মিটার দীর্ঘ ভাসমান ব্যারিকেড পাওয়া যায়। এর পরপরই ফিলিপাইনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিজেদের সার্বভৌম এলাকার মধ্যে না পড়লেও ওই এলাকায় ব্যারিয়ার বসিয়েছে চীন। এ ব্যারিয়ার মাছ ধরার নৌকাগুলোকে শোলের অগভীর পানিতে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, যেখানে মাছের উপস্থিতি বেশি থাকে।
ফিলিপিনো জেলেরা বলছেন, স্কারবোরো শোল এলাকায় চীনের কর্মকাণ্ড তাদের আয়ের মূল উৎস ও ঝড়ের সময় নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জায়গা কেড়ে নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতেতে বিপত্তির মুখে পড়েছে ওই অঞ্চলে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা হাজারো মৎসজীবী ও তাদের পরিবার।
২০১২ সালে ফিলিপাইনের কাছ থেকে স্কারবোরো শোল দখল করে ও মাছ ধরার জায়গায় টহল দিতে উপকূলরক্ষী বাহিনীসহ জাহাজ মোতায়েন করে চীন। সম্প্রতি দক্ষিণ চীন সাগরের ৯০ শতাংশ জায়গা নিজেদের বলে দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে বেইজিং। কিন্তু সাগরের এ অংশ ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত।
স্কারবোরো শোল ফিলিপাইনের প্রধান দ্বীপ লুজন থেকে ২৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে ও চীনের হাইনান থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে। ১৯৮২ সালের সাগরের আইন সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনের অধীনে, তীরের প্রায় ২০০ নটিক্যাল মাইলের (৩৭০ কিলোমিটার) মধ্যে ওই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের এখতিয়ার রয়েছে৷
Advertisement
কিন্তু বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটার উপরেই নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবি করে। এমনকি, বেইজিং ২০১৬ সালের আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কেও উপেক্ষা করেছে। অন্যদিকে, ফিলিপাইনসহ অন্য কয়েকটি দেশও সেই অংশের কিছু জায়গা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ