তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করে জামিন চেয়েছেন মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান।
Advertisement
আপিলে আদিলুর ও এলানের মামলায় সাজা বাতিল, ও আপিল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন চাওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল ও জামিন আবেদন করা হয় বলে জানান আদিলুর-এলানের আইনজীবী মো. রুহুল আমিন ভুঁইয়া। সেই সঙ্গে এ আইনজীবী জানান, গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতের রায়ে আদিলুর রহমান খানকে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো সে সুবিধা দেওয়া হয়নি। সেটি শুনানিতে তোলা হতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে হওয়া মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানসহ দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ডের রায় প্রকাশিত হয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর সেই রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি হাতে পেয়েছেন তার আইনজীবী। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভুঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
আরও পড়ুন>>> আমরা ন্যায়ের জন্য কাজ করেছি: আদিলুর
তিনি বলেন, বিচারকের সইয়ের পর রায়ের অনুলিপি বুধবার আমরা হাতে পেয়েছি। দ্রুতই উচ্চ আদালতে আপিল করে তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়।
এক দশক আগে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে হওয়া মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় দেন। দুই বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি হলেন অধিকারের পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
Advertisement
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার।
ওই বছরের ১০ জুলাই নিহতের তালিকা চেয়ে অধিকারকে চিঠি দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সংগঠনটি তালিকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম। জিডির পর ওই দিনই গ্রেফতার হন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান। ওই বছরের ৯ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি।
আরও পড়ুন>>> আদিলুর-এলানের বিরুদ্ধে রায়ের কপির অপেক্ষায় আইনজীবী
তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ৩২ জনকে সাক্ষী করে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক আসামি এলানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত আদেশের পর উচ্চ আদালতে মামলা বাতিল চাইলে উচ্চ আদালতের আদেশে বিচারকাজ স্থগিত হয়ে যায়।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য শুরুর দুই বছরের ব্যবধানে বিচার শেষে মামলাটিতে রায় ঘোষণা করা হয়।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এমএস