রাজনীতি

খালেদা জিয়ার কিছু হলে পরিণতি শুভ হবে না: আব্বাস

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, তার (খালেদা জিয়া) কিছু হলে পরিণতি শুভ হবে না।

Advertisement

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় ৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এবং ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে এই দোয়া মাহফিরের আয়োজন করা হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি আবারও অনুরোধ জানাবো, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা চলে গেছে। আর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে যেন দেশনেত্রীকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘একটা কথা আমি আবারও বলছি, এই অবস্থায় দেশনেত্রীর যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে আপনাদের কারও কোনো অস্তিত্ব বাংলাদেশে আমরা রাখবো না। আমি দুঃখিত, আমি একটু বোধহয় আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি।’

Advertisement

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা আসলে বোকার স্বর্গে বসবাস করছি। আমরা বুঝতে পারিনি। যেদিন নেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেদিন থেকেই তাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছে। এই গ্রেফতার ছিল তাকে হত্যা করার জন্যে। আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা বুঝেছি গ্রেফতার করা হয়েছে, অসুস্থ হওয়ার পরে আমরা বলা শুরু করেছি তিনি অসুস্থ হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘আসলে ওনাকে গ্রেফতার করে অসুস্থ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে- এটাই ছিল তাদের প্ল্যান। সেই প্ল্যান এখন কার্যকর করছে। আর না হলে কীভাবে অমানুষের মতো, অমানবিকতার মতো একটা কথা বলেন, খালেদা জিয়াকে বাইরে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই, আইনের জটিলতা আছে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পৃথিবীর কোনো আইন-টাইন কাজে লাগে না। যখন জীবন বাঁচানোর প্রয়োজন হয়, তখন তার জন্য যে চিকিৎসা দরকার, সেটা করা দরকার। এটা হলো মানবিক আইন। আন্তর্জাতিক জেনেভা কনভেনশনের একটা আইন আছে- সেই আইনে উনি চিকিৎসা পেতে পারেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।’

আরও পড়ুন>> খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন ফখরুল

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি সরকার এই সুযোগটা নেবে। দেশনেত্রীকে বিদেশে তারা পাঠিয়েছেন- এই সুযোগটা তারা নিতে পারেন।’

কারাবন্দি নেতাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অতীত উদাহরণ তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গতকাল আমাদের মহাসচিব বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওনাকে বিদেশে পাঠাতে হবে। আজকে দেখলাম ওনারা (সরকার) বলছেন, আইনের জটিলতা আছে। আমি আজ স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জিয়াউর রহমানের সময়ে আ স ম আবদুর রবকে জার্মানি পাঠানো হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে রাশেদ খান মেননকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন, তার লিভার টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল, তাকে সুস্থ করেছিলেন। আজ তিনি (মেনন) আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন।’

আব্বাস বলেন, ‘হাজী সেলিম ব্যাংকক গেলেন, চিকিৎসা করে ফেরত এলেন। তিনি বাইরে আছেন, এখন সহিসালামতে আছেন। ম খা আলমগীর (মহিউদ্দিন খান আলমগীর) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েও বাইরে ঘোরারাফেরা করছেন, মায়া (মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বাইরে ঘোরাফেরা করছেন। অথচ আমার নেত্রী কোনো অপরাধ করেননি, তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।’

মিলাদ মাহফিলে সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, ফজলুল হক মিলন, শিরিন সুলতানা, আসাদুর রহমান খান, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/ইএ/জেআইএম