লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে শিশু আহমেদকে (৩) হত্যার দায়ে সৎ মা কহিনুর বেগমকে (২৬) ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ক্ষিপ্ত হয়ে কহিনুর শিশু আহমেদকে লাথি মারলে সে মারা যায়। পরে মরদেহ বসতঘরে মাটিতে পুঁতে রাখে। আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। মামলার সময় থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। রায়ের সময়ও তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে শিশুকে হত্যা
Advertisement
কহিনুর রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর ইউনিয়নের উত্তর দরবেশপুর গ্রামের মোবারক হোসেন কুট্টির মেয়ে। মামলার বাদী কহিনুরের স্বামী মিরন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রায়চৌ গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মিরন ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি করেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রথম স্ত্রী শারমিন আক্তারের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। আহমেদ তার প্রথম সংসারের ছেলে। কিছুদিন পর মিরন রামগঞ্জের কহিনুরকে বিয়ে করে। শিশু আহমেদসহ দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নিজ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২০২২ সালের ২২ জুলাই স্ত্রী-সন্তানকে রেখে তিনি কর্মস্থলে চলে যান। ১০ আগস্ট আহমেদকে নিয়ে কহিনুর রামগঞ্জের দরবেশপুরে তার বাবার বাড়ি যান। সেখান থেকে ২৭ আগস্ট কহিনুর তার স্বামীর বাসায় আসেন। এরপর মিরনকে তিনি জানান আহমেদকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একইদিন ঢাকা থেকে এসে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তিনি ছেলেকে পাননি।
পরে ২৮ আগস্ট হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানান। পরদিন হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ বাসায় গিয়ে কহিনুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। কহিনুর পুলিশকে জানান, ২৬ আগস্ট দিনগত রাত ২টার দিকে পেটে লাথি দিলে আহমেদ মারা যায়। পরে দা দিয়ে খাটের নিচে গর্ত করে তার মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৯ আগস্ট বিকেলে দরবেশপুরে কহিনুরের বাবার বাড়ির শয়নকক্ষের খাটের নিচে পুঁতে রাখা আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একইদিন মিরন বাদী হয়ে কহিনুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
Advertisement
একই বছর ৩০ অক্টোবর রামগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস আদালতে আসামি কহিনুরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
কাজল কায়েস/জেএস/জেআইএম