সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্যাঙ্কার থেকে নিঃসৃত তেল মংলা খাল থেকে পশুর নদ হয়ে শ্যালা নদী এবং সংলগ্ন এলাকাসহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া এ তেল অপসারণের কাজ এখনো চললেও তা খুবই ধীরগতিতে চলছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠেছে।ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে সুন্দরবনের জলজ ও পরিবেশগত ক্ষতি নিরুপণে শুক্রবার পরিদর্শনে গিয়েছিল পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল। প্রথমত পানিতে ভেসে থাকা তেলের কার্যকারিতা নষ্ট করতে নদীতে জাহাজ দিয়ে স্প্রে করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পেছানো হলেও পবর্তীতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় বন বিভাগের আপত্তিতে তা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০ হাজার লিটার `অয়েল স্পিলড ডিসপারসেন্ট` নামের ওই রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে উদ্ধারকারী টাগবোট `কাণ্ডারি-১০` শ্যালা নদীতে পৌঁছায়। এরপর বিকেলে ওই টাগবোট থেকে রাসায়নিক ছিটানো শুরু করা হয়েছিল।শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশের পর মংলা বন্দরে ১১টি বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ আটকা পড়েছে। সেখানে কোনো লাইটারেজ জাহাজ না থাকায় ওইসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। ছড়িয়ে পড়া তেল নদীর পানিতে ভাসছেএদিকে, মাইকিং করে স্থানীয়দের নদীতে ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস ওয়েল সংগ্রহ ও পদ্মা ওয়েল কোম্পানি এবং পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কাছে বিক্রির জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মংলা বন্দর কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, আগের দিনের ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার সকাল থেকেই স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে তেল সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করা বিভাগ ইউনেস্কো-এর বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি পলিন টেমেসিস এক বিবৃতিতে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ছড়িয়ে পড়া তেলের প্রভাবে সুন্দরবনের গাছপালা উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য খুলনার পদ্মা অয়েল ডিপো থেকে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে যাওয়ার সময় মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে `টোটাল` নামে একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় `সাউদার্ন স্টার-৭` নামের ট্যাংকারটির একপাশের খোল ফেটে ডুবে যায় এবং ট্যাংকারটির প্রায় সব ফার্নেস অয়েল বেরিয়ে মঙ্গলবারই সুন্দরবনের শ্যালা নদীর অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
Advertisement