অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অক্টোবরকে ‘জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস’ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটি (এনসিসি)। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অক্টোবর মাসব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় এনসিসি।
Advertisement
আমাদের বিশ্বকে সুরক্ষিত করি-এ প্রতিপাদ্যে মাসজুড়ে সারাদেশে শুরু করতে যাচ্ছে অষ্টম সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস (ক্যাম) অক্টোবরের কর্মসূচি। কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির (এনসিসি) সদস্য প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশীয় উৎপাদিত সফটওয়্যার ব্যবহারের চর্চা বাড়াতে হবে। আর এটি নিশ্চিত করতে হলে প্রযুক্তিতে নিজেদের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা জরুরি। এতে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রযুক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক আয়ও বাড়বে।
মাসব্যাপী কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, মাসব্যাপী ক্যাম ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা সারাদেশে পৌঁছে দিতে যে কোনো ব্যক্তি/সংগঠনকে এ কর্মসূচিতে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় কমিটি। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনলাইনে www.cyberawarebd.com এ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বাংলা টুলকিটসহ বিনামূল্যে বিভিন্ন উপকরণ পাবেন এবং এর মাধ্যমে প্রচারাভিযান করতে পারবেন। তৃণমূল ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ে কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-মাসব্যাপী সারাদেশে এসএমএস ক্যাম্পেইন, সারাদেশ থেকে সামাজিক সংগঠকদের কর্মশালা, সাইবার সুরক্ষা বিষয়ক আলোচনা সভা, প্রতি সপ্তাহে বিশিষ্টজনদের নিয়ে বিষয়ভিত্তিক ওয়েবিনার, স্যোশাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন ইত্যাদি।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্স (এনসিএসএ) এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিম্রাইএসএ) পৃথিবীজুড়ে সাইবার সচেতনতা মাসের এ ক্যাম্পেইনের নেতৃত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৪ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের অগণিত বাণিজ্যিক-সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ের অসংখ্য ‘সাইবার চ্যাম্পিয়ন’ সাইবার সচেতনতা মাসের কর্মসূচিতে অংশ নেয়। বাংলাদেশে ২০১৬ সালে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউেন্ডশন (সিক্যাফ) এ কর্মসূচির সূচনা করে।
Advertisement
২০২১ সালে জাতীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে তৃণমূলের সামাজিক সংগঠকদের যুক্ত করা শুরু হয়। ২০২২ সালে সারাদেশ থেকে ২২৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা পোস্ট করা, বিভিন্ন ধরনের রিসোর্স তৈরি, প্রবন্ধ রচনা ও প্রকাশ, অনলাইন ইভেন্ট পরিচালনা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাসের চ্যাম্পিয়নবৃন্দ দেশের নাগরিকদের সাইবার জগতে নিরাপদ হতে সহযোগিতা করেছে। এ বছরও এ কর্মসূচিকে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির (এনসিসি) সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন রবির সাইবার সিকিউটি অ্যান্ড প্রাইভেসি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় চক্রবর্তী, এনসিসিএ সদস্য; ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন, এনসিসি সদস্য মো. আবুল হাসান, বাংলাদেশ সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস ফোরামের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান, ব্লাস্টের সহকারী পরিচালক-শালিস ও সিএসডব্লিউসির উপদেষ্টা তাপসী রাবেয়া প্রমুখ৷
আরএসএম/এমআইএইচএস/জেআইএম
Advertisement