রাজনীতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ

শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. মো. শফিকুর রহমান, হেফাজত নেতা মামুনুল হক ও মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমানসহ রাজবন্দিদের মুক্তি ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ।

Advertisement

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্রেস ক্লাবে বিরোধীদলগুলোর চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদের মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মিয়া মশিউজ্জামান এবং সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব মোশতাক আহমেদ শিশির।

সভায় বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের শত্রু। দলটি ১৯৭৪ সালে মাত্র ১১ মিনিটে সংসদে দাঁড়িয়ে সব দল নিষিদ্ধ করে এক নেতার এক দেশ ও এক দলীয় শাসন- বাকশাল কায়েম করেছিল।

গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র উদ্ধার নিয়ে কথা বলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, হেফাজতে ইসলামীর নেতা মাওলানা মামুনুল হক, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের বন্দি করে রেখেছে। অন্যদেরও গায়েবি মামলায় আসামি করে হয়রানি করছে। গণতন্ত্র উদ্ধারে কাজ করায় নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও বিচারের নামে হয়রানি করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও আওয়ামী লীগ তাদের পতন ঠেকাতে পারবে না, তাদের পতন খুবই কাছাকাছি।

Advertisement

ফারুক হাসান বলেন, আওয়ামী লীগ আদালতের রায়কে অমান্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে আবারো গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে হাজার হাজার মানুষকে গুম ও ক্রসফায়ার নামক নাটকের মাধ্যমে খুন করেছে। অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান হেফাজত গণহত্যার কিছু তথ্য প্রকাশ করায় বিচার নামক প্রহসনে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব আতাউল্লাহ বলেন, খালেদা জিয়া, শফিকুর রহমান, মামুনুল হক, আদিলুর রহমানকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে। বিচারের নামে ড. ইউনূসকে যে সাজা দেওয়ার নোংরা পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া হবে না। আমি বন্ধু রাষ্ট্রদের অনুরোধ করবো, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আপনারা যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন তা মানুষ গ্রহণ করেছে। আমাদের যুদ্ধে জয়ী হওয়া পর্যন্ত আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে মশিউজ্জামান বলেন, ‘অবৈধ সরকারের কাছে আমাদের কোনো দাবি নাই। দেশটা দেউলিয়া হয়ে গেছে। জনগণ ফুঁসে উঠছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাই কেবল আপনাদের বাঁচাতে পারে। অন্যথায় জনগণ আপনাদের লক্ষ্যবস্তু বানাবে। শ্রীলঙ্কার জনগণ কিভাবে সেখানকার স্বৈরাচার নামিয়েছিল, গণধোলাই দিয়েছিল তা ভুলে যাওয়ার কথা না। তাই জনগণের টার্গেট হওয়ার আগে দ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিন।’

যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন, হামলা-মামলা করে, গুম-খুন করে কেউ কোনোদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আপনারা যদি জোর করে আরেকটা ইলেকশন দিতে চান তাহলে আরো স্যাংশনে পড়বে দেশ, তাই দ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিন।

Advertisement

সভায় গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মালেক ফরাজি, ব্যারিস্টার জিশান মহসিন, সাদ্দাম হোসেন, আরিফুর রহমান তুহিন, সহকারী আহ্বায়ক সাকিব হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শেখ খাইরুল কবির, মো. শামসুদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য ইসমাইল বন্ধন, জিয়াউর রহমান, শামীম রেজা, ইমাম হোসেন, মোজাম্মেল মিয়াজি, ইঞ্জিনিয়ার ফাহিমসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমএএইচ/এএসএম