জাতীয়

বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী ভিয়েতনাম

বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী ভিয়েতনাম। একইসঙ্গে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে বাংলাদেশ সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানেও আগ্রহী দেশটি।

Advertisement

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির (এনএ) চেয়ারম্যান ভুং দিন হিউয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।

‘ভিয়েতনাম বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়াতে খুবই আগ্রহী,’ রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদিন বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যান ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ যৌথভাবে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, যোগাযোগ, কৃষি, মৎস্য ও সংস্কৃতি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে পারে।

ভিয়েতনামের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ভিয়েতনামের সঙ্গে এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে তিনি ভিয়েতনামের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আও বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে... ভিয়েতনামের বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় বাজারে ব্যবহারের জন্য পণ্য তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য বাজারে, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বের বাজারে রপ্তানি করার জন্য বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ খুঁজে পেতে পারেন, রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।

Advertisement

তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ওষুধ, তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, টেক্সটাইল সামগ্রী, কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইলসহ আরও বাংলাদেশি পণ্য আমদানির কথা বিবেচনা করতে পারে।

রাষ্ট্রপ্রধান অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) এর ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ এর সদস্য হওয়ার জন্য ভিয়েতনামের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেছেন।

রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ভিয়েতনাম সরকার এবং এর জনগণ অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির জন্য যথাক্রমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভিয়েতনামের মহান নেতা হো চি মিন-এর ঐতিহাসিক অবদানের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে রাষ্ট্রপতি ট্রান দাই কুয়াং-এর বাংলাদেশ সফর এবং আগস্ট ২০১৫-এ রাষ্ট্রপতির ভিয়েতনাম সফর এবং নভেম্বর ২০১২-এ প্রধানমন্ত্রীর ভিয়েতনাম সফর দুই দেশের গঠনমূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি শক্ত ভীত তৈরি করেছে।

দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সরঙ্গ ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যানের সফরে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এমআইএইচএস/এএসএম