বিড়াল গৃহপালিত আদুরে প্রাণী। আমাদের দেশে অনেকেই বিরাট পালন করে থাকেন। মানসিক চাপ কমানো. ঘর ইদুরমুক্ত রাখাসহ বিড়াল পালার কিছু উপকারিতাও রয়েছে। শহরাঞ্চলে আজকাল বিভিন্ন জাতের বিড়াল বেচাকেনাও হয়।
Advertisement
চার মাজহাবের অধিকাংশ আলেমদের মতেই গৃহপালিত বিড়াল বেচাকেনা করা বৈধ।
তবে জাহেরি মতাদর্শের কিছু আলেম বিড়াল কেনাবেচা করাকে অবৈধ বলেন। তাদের দলিল হলো সহিহ মুসলিমে সংকলিত একটি হাদিস যা আবু জুবায়ের থেকে বর্ণিত। আবু জুবায়ের বলেন, আমি জাবেরকে (রা.) কুকুর ও বিড়ালের মূল্য গ্রহণ করা বৈধ কি না সে ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বলেছেন, নবিজি (সা.) এটা থেকে নিষেধ করেছেন। একই রকম হাদিস সুনানে আবু দাউদেও সংকলিত হয়েছে।
আলেমরা কেউ কেউ এই হাদিসগুলোকে যয়িফ বা দুর্বল মনে করেছেন। অনেকে বলেছেন, এ হাদিসগুলোর উদ্দেশ্য জংলি বিড়াল হতে পারে। অনেকে বলেছেন, হাদিসের নিষেধাজ্ঞা মাকরূহে তানযিহি বা কিছুটা অপছন্দনীয় অর্থে, কঠোর নিষেধাজ্ঞা নয়। অনেকে মনে করেন, হাদিসে এমন বিড়ালের মূল্য গ্রহণ করতে বা বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে, যা বিক্রেতার মালিকানাধীন নয়।
Advertisement
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, “গৃহপালিত বিড়াল বেচাকেনা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে অধিকাংশ আলেমদের মধ্যেই কোনো মতবিরোধ নেই। বিড়াল বেচাকেনাকে বৈধ বলেছেন সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) প্রখ্যাত তাবেঈ ইবনে সিরিন (রহ.) হাম্মাদ (রহ.) সুফিয়ান সাওরি (রহ.)। চার মাজহাবের ইমামরা অর্থাৎ ইমাম মালেক (রহ.), ইমাম শাফেঈ (রহ.), ইমাম আহমদ (রহ.) ও ইমাম আবু হানিফার (রহ.) মতেও বিড়াল বেচাকেনা বৈধ।
যেহেতু বিড়াল বৈধ পবিত্র ও উপকারী প্রাণী। তাই গাধা ও খচ্চরের মতো বিড়াল বেচাকেনা করাও বৈধ। বিড়াল বেচাকেনা অবৈধ হওয়ার কোনো কারণ পাওয়া যায় না। তবে সাহাবি আবু হোরায়রা (রা.) তাবেঈ মুজাহিদসহ (রহ.) কেউ কেউ বিড়াল বেচাকেনাকে মাকরুহ বা অপছন্দনীয় মনে করেছেন।
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, উল্লিখিত হাদিসগুলোর জবাব দুভাবে দেওয়া যেতে পারে। এক. হতে পারে হাদিসগুলোতে জংলি বিড়ালের কথা বলা হয়েছে। দুই. হতে পারে হাদিসের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য কিছুটা অপছন্দনীয় বা মাকরুহে তানযিহি বোঝানো, হারাম বা মাকরুহে তাহরিমি নয়। (আল-মাজমু’)
সূত্র: ইসলাম ওয়েব
Advertisement
ওএফএফ/জিকেএস