টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ও শহীদ শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের নিচতলা। এতে বেশ বিপাকেই পড়েছেন হলের শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে হলের নিচতলায় পানি উঠে এই জলাবদ্ধতা ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এদিকে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হওয়ায় রাত ১২টা থেকে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় সময় পার করছেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগের দিনেও হল প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের পাশে না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি জানতে হলের প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক শিক্ষক ও দায়িত্বরত শিক্ষককে সাংবাদিকরা ফোন দিলে কথা বলতে রাজি হননি তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, রাত ৯টার পর থেকে হলের ভেতরে পানি প্রবেশ শুরু হয়। হলগেটে হাঁটুসমান পানি জমেছে। রাত ১১টায় হলের নিচতলার গণরুমগুলোতে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এ সময় হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে ওপরের তলায় বন্ধু বা সিনিয়রদের রুমে অবস্থান নেন। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হয়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: মিরপুরে বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে ৪ জনের মৃত্যু
এদিকে টানা বর্ষণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনেক এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে। ভিসি চত্বর থেকে নীলক্ষেত রোড, শাহনেওয়াজ হোস্টেল, নিউমার্কেট এলাকা হাঁটুসমান এবং স্থানভেদে কোমর পর্যন্ত পানি লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে কুয়েত মৈত্রী হল তুলনামূলক নিচু অবস্থানে হওয়ায় বেশি দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান জাগো নিউজকে বলেন, নিচতলায় সব রুমে পানি ঢুকে গেছে, অফিসরুমেও পানি ঢুকে গেছে, প্রায় হাঁটুসমান পানি, ওয়াশরুমগুলো ডুবে যাওয়ায় নোংরা পানি মিশে গেছে, হলের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ব্লাস্ট হয়ে আগুন লাগায় বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করা হয়েছে, এখন হলে বিদ্যুৎ নেই।
ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, আমাদের এমন জরুরি অবস্থা মাথায় রেখে কোনো পূর্বপ্রস্তুতি কেন নেয়নি প্রশাসন? এই রাতে মেয়েগুলো তাদের জিনিসপত্রসহ কোথায় যাবে? সন্ধ্যা থেকে যখন পানি বাড়তে শুরু করে তখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। রাত ১১টার দিকে পানি রুমে প্রবেশ করে। এখন আমরা ওপরের তলায় অবস্থান করছি।
Advertisement
ওয়াজিহা জাহান জুঁই নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টে বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কুয়েত মৈত্রী হলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে নিচতলা ডুবে গেছে। পানি সিঁড়ির নিচ পর্যন্ত চলে এসেছে। গণরুমে পানি ঢুকে গেছে। হলের মুদি দোকানের ফ্রিজে পানি ঢুকে ব্লাস্ট করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ। এ সময় তিনি গণরুমের শিক্ষার্থীদের তার নিজের রুমে আসার অনুরোধ করেন।
সার্বিক পরিস্থিতি জানতে হলের প্রাধ্যক্ষ ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের ফোন দেওয়া হলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আল সাদী ভূঁইয়া/এমআরএম