আইন-আদালত

অপহরণ-ধর্ষণচেষ্টার মামলায় ওসি মিজানুরের যাবজ্জীবন

চট্টগ্রামে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার মামলায় মিজানুর রহমান নামে এক পুলিশ পরিদর্শকের (বরখাস্ত) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ চট্টগ্রামের বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন বলেন, মামলায় কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার দুই অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পর সাজা পরোয়ানামূলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১২ জুলাই ছেলেবন্ধু নিয়ে ফয়স লেক এলাকায় বেড়াতে যান চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি বেসরকারি কলেজের এক ছাত্রী। ওইদিন ফয়স লেক থেকে ছেলেবন্ধুসহ ওই ছাত্রীকে জোর করে গাড়িতে তুলে চকবাজার এলাকার একটি হোটেলে নিয়ে যান পুলিশ পরিদর্শক মিজান। এরপর ওই হোটেলের দুই কক্ষে দুইজনকে আটকে রাখা হয়। রাতে ওই ছাত্রী ধর্ষণের চেষ্টা চালান মিজান। এসময় ওই ছাত্রী হোটেল কক্ষের শৌচাগারে আশ্রয় নেন এবং কাঁচ দিয়ে নিজের হাত কেটে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

Advertisement

ঘটনার সময় মিজানুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় পদায়িত ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি চট্টগ্রামের একটি মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে পাঁচদিনের ছুটিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আগে মিজান নগরীর পাঁচলাইশ থানায় কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনার পরে মিজানুরকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ বিভাগ। পরে তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার চলাকালীন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল জামিন বাতিল করে মিজানুর রহমানকে কারগারে পাঠায় আদালত। পরে মামলায় যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন আদালত।

বিচারকাজে আদালত ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। অন্যদিকে, এ মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আদেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

মামলার রায়ে অপহরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে উভয় দণ্ড একত্রে চলবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইকবাল হোসেন/এমএএইচ/জেআইএম

Advertisement