আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতির খবরে বিক্ষোভ, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে সংঘাত বন্ধে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে চটেছেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনাকে আর্মেনিয়া সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে মনে করছেন তারা। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে আর্মেনিয়ার রাজধানীতে জড়ো হতে দেখা গেছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা বলছেন, আজারবাইজানের কাছে পরাজিত হয়েছে আর্মেনীয় সরকার।

Advertisement

স্থানীয় সময় বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ইয়েরেভানের কেন্দ্রস্থলে রিপাবলিক স্কয়ারে জড়ো হয় বিক্ষোভকারীরা। তারা প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের পদত্যাগের দাবি জানান। ২০২০ সালে দুপক্ষের মধ্যকার যুদ্ধে আজারবাইজানের কাছে পরাজয় এবং এখন কারাবাখে আর্মেনীয় কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত পতনের জন্য তাকেই দায়ী করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: নাগোরনো-কারাবাখে আজারবাইজানের অভিযান, নিহত ২৭

এদিকে নিকোল পাশিনিয়ানের নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বিরোধী রাজনীতিবিদরাও। ২০১৮ সালে এক বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি। বিরোধী রাজনীতিবিদ আভেতিক চালাবিয়ান বিক্ষোভের সময় বলেন, রাশিয়া হাত সরিয়ে নিয়েছে, আমাদের কর্তৃপক্ষও আর্তসাখ পরিত্যাগ করেছে।

Advertisement

তিনি বলেন, শত্রুরা এখন আমাদের ঘরের সামনেই। সুতরাং জাতীয় নীতি পরিবর্তনের জন্য আমাদের অবশ্যই সরকার পরিবর্তন করতে হবে। এদিকে পার্লামেন্টে বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন আইনপ্রণেতা ইশখান সাঘাতেলিয়ান।

আজারবাইজান বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) নাগোরনো-কারাবাখে অভিযান স্থগিত করেছে। এর আগে ওই অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায় আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। সেখানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে আজারবাইজানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

বিচ্ছিন্ন ওই অঞ্চলের চারপাশে কয়েক মাস ধরেই উত্তেজনা বেড়ে গেছে। প্রায় তিন বছর আগেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। নাগোরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া অন্তত দুবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। ১৯৯০’র দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত এই দেশ দুটি বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার সংঘাতে সে সময় দুপক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

Advertisement

আরও পড়ুন: নিখোঁজ ১০ হাজারের বেশি মানুষের এখনো সন্ধান মেলেনি

পরবর্তীতে আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়ার হস্তক্ষেপে তারা শান্তিচুক্তিতে সম্মত হয়। নাগোরনো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে রাশিয়া। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো।

আর্মেনিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে সংঘাতে কমপেক্ষ ৩২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে সাতজনই বেসামরিক নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ২০০ মানুষ। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদী এক আর্মেনীয় মানবাধিকার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেখানে কমপক্ষে ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও চার শতাধিক মানুষ। তবে এই সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

টিটিএন