স্বাস্থ্য

‘প্রেসক্রিপশন পয়েন্টে’ তালা, অভিযান নিয়ে প্রশ্ন কর্তৃপক্ষের

রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত ‘প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড ও ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার’ বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ‘অবৈধভাবে’ এটি বন্ধ করা হয়েছে।

Advertisement

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসময় প্রতিষ্ঠানটিতে তালা দেওয়া হয়। তবে কী কারণে বন্ধ করে দেওয়া হলো এ বিষয়ে অভিযানে থাকা কোনো কর্মকর্তা কথা বলেননি। এমনকি অভিযানে থাকা উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেট ইরতেজা হাসান গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

তবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির পরিচালক খন্দকার আবু আশফাক অভিযোগ করেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে কিছু ব্যক্তির ইন্ধনে ক্লিনিক পরিদর্শনের নামে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, অতি উৎসাহী হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ‘প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ বন্ধ করতে একের পর এক নোটিশ দিয়ে আসছিল। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই কার্যক্রম বন্ধ করে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। অথচ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভেতরে প্রবেশ করেন।

Advertisement

প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের গেটে ঝুলিয়ে দেওয়া নোটিশে দেখা যায়, ‘অনিবার্য কারণবশত প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট সাময়িক বন্ধ থাকবে।’ তবে কোন কর্তৃপক্ষ নোটিশটি ঝুলিয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির পরিচালক বলেন, ১৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি দল প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে। পরবর্তীতে একটি চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অমান্য, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট এবং অদক্ষ জনবলের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স স্থগিত করার আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

খন্দকার আবু আশফাক আরও বলেন, আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটি আপিল করলেও তা অগ্রাহ্য করা হয়। পরে নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করলেও তারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। এরপর আমরা আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করি। রিটটি এখন শুনানির অপেক্ষায়। এরপরও তারা আজ আবার এসে বন্ধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা লাগিয়ে দিয়ে যায়।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু আশফাক বলেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ১৬ বছর ধরে ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হচ্ছে। এ বছরের ১৮ জানুয়ারি ছয় কোটি টাকা দলিল মূল্যে কিনে নেয় ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ এ সম্পত্তির দাম ৪৫ কোটি টাকার বেশি। নামমাত্র মূল্যে এ সম্পত্তি কিনে নিলেও বাড়ি ছাড়ার কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি, বরং তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

Advertisement

অভিযানে থাকা বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে আসবেন জানিয়ে আমাদের সহায়তা চান। পরে পুলিশ সেখানে যায়।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) আহমেদুল কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

টিটি/জেডএইচ/এমএস