শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আনোয়ারা বেগম (৫০) নামের এক নারীকে খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে।
Advertisement
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সখিপুর থানার গাজীপুর হাজী ছাদিম আলী সরদার কান্দি এলাকার মোনছের সরদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী খোকন সরদারের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে মোনছের সরদারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জমিতে পাট কাটছিলেন। এসময় প্রতিবেশী খোকন সরদার ওই জমি তার বলে দাবি করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে খোকন সরদার, দাদন সরদার, সেলিম সরদারসহ বেশ কয়েকজন আনোয়ারাকে ঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালান।
নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আনোয়ারা। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সখিপুর থানাপুলিশ ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম দুলাল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আনোয়ারা বেগমকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে আনোয়ারা বেগমের মেয়ে তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে খোকন সরদারসহ ৯ জনকে আসামি করে সখিপুর থানায় মামলা করেন।
Advertisement
ভুক্তভোগীর মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার মায়রে খোকন সরদার আর তার ভাইয়েরা শিকল দিয়ে বাইন্ধা অনেক মারছে। পানিতে চুবাইয়া পা দিয়া ধরে রাখছে। মানুষ হইলে এই কাজ করতে পারতো না। আমি এ ঘটনায় অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘আনোয়ারাকে উপুড় করে ফেলে ইচ্ছামতো পেটানো হইছে। কেউ লাথি দেয়, কেউ ঘুসি দেয়; কেউ আবার ছ্যাছড়াইয়া টাইনা নিয়া যায়। একটা মানুষকে এভাবে মারা হয়েছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম দুলাল বলেন, ‘আমি ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আনোয়ারাকে একটি ভবনের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে বেঁধে রাখা হয়েছে। আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করলে আমাকে বাধা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এলে আমরা সবাই মিলে ওনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।’
এ বিষয়ে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Advertisement
এসআর/এমএস