রংপুর জেলা যুবলীগের সম্মেলনের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও হয়নি কমিটি গঠন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হওয়ায় বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন নেতাকর্মীরা।
Advertisement
সবশেষ ১৯৯৫ সালে রংপুর জেলা যুবলীগের কমিটি গঠন হয়। এর ২৭ বছর পর ২০২২ সালের ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর রাশেদুন্নবী জুয়েলকে আহ্বায়ক ও মামুনুর রশিদ মামুন, লক্ষিণ চন্দ্র দাস, কামরুজ্জামান শাহিন, শেখ সাদি এবং ডা. লুৎফর আলী রনিকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্যের জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেই সময় ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৫ বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি।
এরই মধ্যে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতীর এলেঙ্গার ভূঞাপুর সংযোগ সড়কের কাছে ট্রাক-পাজেরো সংঘর্ষে আহ্বায়ক রাশেদুন্নবী জুয়েল নিহত হন। পরবর্তী সময়ে কমিটি পুনর্বহাল করা না হলে তাদের দলীয় কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। এরপরই ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল নির্বাচিত হয়ে রংপুর জেলা যুবলীগ কমিটি সচল করার উদ্যোগ নেন।
Advertisement
২০২২ সালের ৫ নভেম্বর রংপুর জিলা স্কুল মাঠে রংপুর জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। রংপুর জেলা যুবলীগের তৎকালীন যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, শাজাহান খান এমপি, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক।
সম্মেলনে সভাপতি পদে রংপুর কলেজের সাবেক জিএস ওয়াসিমুল বারী শিমু, জেলা যুবলীগের তৎকালীন যুগ্ম আহ্বায়ক লক্ষিণ চন্দ্র রায়, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মায়া, জেলা যুবলীগের সদস্য মাসুদ রানা বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল হাসান লিউ, যুবলীগ জেলা কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক হাসানুল কবীর তুহিনের নাম উঠে আসে। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা যুবলীগের তৎকালীন যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান শাহিন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান কানন, যুবলীগের তৎকালীন যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. লুৎফর আলী রনি, যুবলীগ নেতা ডিজেল আহমেদ, শহর ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মাহফুজার রহমান বুলেটসহ ৪০ জনের বেশি নেতা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেন।
রংপুর জিলা স্কুল মাঠে সম্মেলন শেষ হওয়ার পর সভা মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় দ্বিতীয় অধিবেশন অর্থাৎ কাউন্সিল অধিবেশন নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডিউক চৌধুরী এমপিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। কাউন্সিল অধিবেশনে ১২ জন সভাপতি পদপ্রার্থীর সাক্ষাৎকার নেন নেতারা।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ৪ জন একজন প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
Advertisement
ফলে শেষ পর্যন্ত সভাপতি পদে ১২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৪ জন প্রার্থী থেকে যান। এসময় যুবলীগের চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন, তিনি ঢাকায় ফিরে গিয়ে প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাই বাছাই করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন। এরপরই কাউন্সিল অধিবেশন কোনো কমিটি ঘোষণা ছাড়াই রাত সাড়ে ৮টায় শেষ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, কমিটি নিয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান কাজ করছেন। এ মাসেই ঘোষণা আসতে পারে।
এফএ/এমএস