সন্তানরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মা আসমা আক্তার। একজন নয়, আসমা আক্তারের চার সন্তানই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। বর্তমানে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ছোট মেয়ে আর মেজে মেয়ে আইসিইউতে ভর্তি। সন্তানদের এমন অবস্থা দেখে পাগলপ্রায় আসমা আক্তার।
Advertisement
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দুই নম্বর ওয়ার্ডের ২৫ নম্বর বেডে অসহায় হয়ে বসে আছেন আসমা আক্তার। তার বাসা শেওড়াপাড়ায়।
আরও পড়ুন>ডেঙ্গু/প্রতিদিন গড়ে একজন করে মারা যাচ্ছেন মুগদা হাসপাতালে
আসমা আক্তারের ছয় মাসের শিশু ছিদরাতুল মুনতাহা সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি। কিছুদিন আগে বড় মেয়ে সাবিহা উদ্দিন শিখা ও সুমাইয়া উদ্দিন মানহাও ডেঙ্গু জ্বরে একই হাসপাতালে ভর্তি ছিল। একমাত্র ছেলে আরাফাত উদ্দিন আফিফও আইসিইউ থেকে বের হয়েছে সম্প্রতি।
Advertisement
আসমা আক্তার বলেন, ‘মশা আমার পরিবারকে শেষ করে ফেলেছে। চার সন্তানই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। এক মেয়ের জ্বর ছাড়ে অন্য মেয়ের জ্বর আসে। ছেলে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। আমিও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম। বাচ্চাদের দেখভালে আমার নিজের জ্বর টের পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক মশা। মশা মারার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখি না।
আরেক শিশু মেহেনাথ জাহান মরিয়ম। মিরপুর-১১ থেকে শিশু হাসপাতালে গত ৮ দিন আগে ভর্তি হয়। মা হাছিনা বেগম বলেন, ক্যানলা পরাতে বাচ্চার খুব কষ্ট হয়, সারাদিন কান্না করে।
আরও পড়ুন> ডেঙ্গু/‘শিশু হাসপাতাল সরকারি হলেও খরচ বেসরকারির মতোই’
Advertisement
বর্তমানে শিশু হাসপাতালে মোট ১২১ শিশু ভর্তি। এর মধ্যে আইসিসিইউতে ভর্তি ৯ জন। ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট এক হাজার ৩৬৯ জন শিশু চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এ সময়ে ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছে ১৭ শিশু।
করোনা মহামারির পর দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরে এ বছর এখন পর্যন্ত মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেশি। ডেঙ্গু রোগীর চাপে সংকটময় পরিস্থিতি পার করছে হাসপাতালগুলো। রোগীর চাপে একদিকে যেমন শুরু হয়েছে শয্যা সংকট, অন্যদিকে বহির্বিভাগে রোগী সামলাতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের।
এমওএস/এসএনআর/জিকেএস