পটুয়াখালীতে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেইসঙ্গে সর্দি-জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। এতে চাহিদা বেড়েছে এনএস ও ডিএনএস স্যালাইনের। ফলে জেলাজুড়ে স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় হাসপাতাল ও ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত স্যালাইন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
Advertisement
গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩০০ জন। এছাড়া জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গুতে মারা গেছেন পাঁচজন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ জন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ২৭৩ জন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু ওয়ার্ডের কোথাও রোগীর জন্য শয্যা খালি নেই। ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দা ও মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা।
আরও পড়ুন: ফার্মেসিতে স্যালাইন সংকট প্রকট, বিপাকে ডেঙ্গুরোগীরা
Advertisement
পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বলইকাঠী গ্রামের আতিকুর রহমান বলেন, চারদিন হলো হাসপাতালে ভর্তি। এখন একটু সুস্থ। তবে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। স্যালাইন পাওয়া যায় না। ফার্মেসিতে গেলে বলে নাই, হাসপাতালে তো দিচ্ছেই না।
ছোটবিঘাই ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল ভর্তি হয়েছি, এখন পর্যন্ত বেড পাইনি। কী আর করার এরমধ্যেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, স্যালাইনের যে সংকট এটা যেন দ্রুত সমাধান করে।
হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বলছেন, তারা গুরুতর বা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা কোনো রোগীকে ফেরত পাঠাননি। তবে শয্যা স্বল্পতার কারণে মেঝেতে রেখে হলেও তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: আইভি স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে ১০ গুণ, সংকটের আশঙ্কা
Advertisement
এদিকে ফার্মেসি মালিকদের দাবি, ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন না দেওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। আর ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, এলসিসহ কাঁচামালের স্বল্পতার কারণে কোম্পানি চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন দিতে পারছে না। যেখানে এক ফার্মেসির প্রয়োজন দুই কেস, সেখানে দেওয়া হচ্ছে মাত্র পাঁচ থেকে ১০ ব্যাগ।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটের এইচ আর ফার্মেসির পরিচালক রেজা খান বলেন, গত ১৫ দিন ধরে স্যালাইনের খুবই সংকট। রোগীরা আসলেও দিতে পারছি না। কোম্পানিরা কিছু স্যালাইন দিলেও তা শেষ হয়ে যায়। তাদের কাছে চাইলে বলে সাপ্লাই নেই।
আরও পড়ুন: স্যালাইন সংকট, একটির বেশি কিনতে পারছেন না রোগীরা
এ বিষয়ে একমি ওষুধ কোম্পানির পটুয়াখালী বিক্রয় প্রতিনিধি সুমন আহমেদ বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার পরে স্যালাইন এবং সাপোজিটরের সংকট দেখা দিয়েছে। উৎপাদন করতে না পারায় গত দুই মাস থেকে আমরা চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই করতে পারছি না। তিনি বলেন, হেড অফিস থেকে না আসলে আমরা কীভাবে দেবো?
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, হাসপাতালসহ সব জায়গাতেই স্যালাইনের সংকট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। শিগগির সমাধান পাওয়া যাবে।
এমআরআর/জেআইএম