নয় বছর বয়সী আমির হামজা। অন্য শিশুদের মতো হেসে খেলেই তার দিন কাটতো। কিশোরগঞ্জের মিঠা মইন উপজেলায় গ্রামের একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো শিশুটি। শিশুটির বাবা আল-আমিন কখনো অন্যের জমিতে কাজ করে, কখনো রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সম্প্রতি বাবা আল-আমিনের কোনো কাজ না থাকায় শিশুটি এবং তার পরিবার নিয়ে চলে আসেন গাজীপুরের টঙ্গীতে।
Advertisement
গত আগস্ট মাসে সাড়ে তিন হাজার টাকায় একটা বাসাভাড়া নিয়ে থাকছিলেন আল-আমিন। গত মাসের ১১ তারিখ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে ছেলে আমির হামজা। ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেলেও সুস্থ না হওয়ায় পরদিন হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে উত্তরা লেক ভিউ স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডে নিয়ে যান অ্যাম্বুলেন্সচালক। সেখানে দুদিনে ছেলে আমির হামজার চিকিৎসার বিল হয় ৩৯ হাজার টাকা। দিনমজুর আল-আমিন সেখানে হাতে পায়ে ধরে ২৬ হাজার টাকা ধার করে হাসপাতালে দেন। সেখান থেকে আগারগাঁও শিশু হাসপাতালে নেন আমির হামজাকে। এরপর গত ১৯ আগস্ট নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।
শিশু আমির হামজার বাবা আল-আমিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে জানা যায় ছেলের ব্রেইনে ইনফেকশন হয়েছে। অবস্থা খারাপ হওয়ায় গত ৩ সেপ্টেম্বর তাকে নেওয়া হয় আইসিইউতে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে আমির হামজাকে। হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার ওষুধ সরবরাহের পাশাপাশি দিনমজুর বাবা আল-আমিনকেও প্রতিদিন কিনে দিতে হচ্ছে প্রায় ৪-৫ হাজার টাকার ওষুধ। হতদরিদ্র এই মানুষটির জন্য যা এখন একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এরই মধ্যে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা ধার করেছেন তিনি। বাসার আশপাশের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে চালিয়েছেন ছেলের চিকিৎসা। কিন্তু এখন আর কোনো সামর্থ্যই তার নেই ছেলের চিকিৎসা করার।
Advertisement
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদের অধীনে ভর্তি রয়েছে শিশু আমির হামজা। দেড় বছরের আরেক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে আইসিইউর সামনেই কাটে আল আমিনের দিন।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশু আমির হামজার ব্রেইনে ইনফেকশন হয়েছে। ১০ দিন ধরে আইসিইউতে। অবস্থা বেশি ভালো নয়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরেও প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার টাকার, কখনো তার বেশি টাকার ওষুধ বাইরে থেকে তার পরিবারকে কিনে আনতে হচ্ছে। রোগীর অবস্থা ভালো হতে কতদিন লাগবে তা বোঝা যাচ্ছে না। তার পরিবারের যেই অবস্থা দীর্ঘদিন এ ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়।
ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান ও দানশীল ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে দিনমজুর আল-আমিন বলেন, গত এক মাস ধরে ছেলের চিকিৎসায় ৮০-৯০ হাজার টাকা ঋণ করেছি। ছেলের অবস্থা ভালো হচ্ছে না। আরও এক মাস থাকতে হলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা দরকার। সবার কাছে আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চাই।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা:শিশুর বাবা আল-আমিননগদ: +880 1825-339928
Advertisement
আরএসএম/এমআরএম/এএসএম