জাতীয়

যাত্রী ওঠানামার সুযোগ না থাকায় চলছে না বাস

সর্বসাধারণের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উন্মুক্ত হলেও এর ওপর দিয়ে চলছে না বাস। কারণ হিসেবে চালকরা বলছেন, তাদের যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি স্টপেজ রয়েছে। এসব স্টপেজ থেকে যাত্রীরা ওঠেন। কিন্তু এক্সপ্রেসওয়েতে এ সুযোগ নেই। তাই এর ওপর দিয়ে বাস চললে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় বাসচালকদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

Advertisement

তারা বলেন, উত্তরা-বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন রুটে গণপরিবহনগুলো চলাচল করে। বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত বিভিন্ন বাস স্টপেজে উঠানামা করে যাত্রী। আবার কোনটা খিলক্ষেত, বনানী ও মহাখালী হয়ে বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ এবং গুলিস্তান যায়। মহাখালী থেকে কোনটা সাতরাস্তা হয়ে মালিবাগ, বিমানবন্দর থেকে নতুন বাজার, বাড্ডা রামপুরা হয়ে শান্তিনগর, গুলিস্তান পর্যন্ত চলাচল করে। ফলে বাস চলাচলের রুট ও যাত্রীর কথা চিন্তা করেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠছে না তারা।

আরও পড়ুন: যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে না এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: আইপিডি

বলাকা বাসের চালক শহীদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে গেলে যাত্রী হয় না। আবার বাসে উত্তরা-বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত, বিশ্বরোডের যাত্রী থাকে। এসব স্থানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামানোর জায়গা নাই। সে জন্য নিচ দিয়ে যাই।

Advertisement

রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে মতিঝিলে চলাচল করা ৮ নম্বর বাসের চালক বলেন, একটা বাসে তো আর বিমানবন্দর-ফার্মগেটের সব যাত্রী থাকে না। বিভিন্ন স্থানের যাত্রী থাকে। ওপর দিয়ে গেলে এখন কম যাত্রী পাওয়া যাবে। এভাবে গেলে আমাদের পুষবে না।

২ সেপ্টেম্বর কাওলা অংশে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সবার জন্য খুলে দেওয়া হয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

আরও পড়ুন: বিমানবন্দর-উত্তরা সড়কের ‘মুশকিল আসান’ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

এ দূরত্বের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার এবং র‌্যাম্পসহ ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এই অংশে মোট ১৫টি র‌্যাম্পের মধ্যে ১৩টি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। কিন্তু মহাখালী ও বনানী অংশ থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠার র‌্যাম্প এখনো চালু হয়নি। এ দুটি র‌্যাম্পের নির্মাণকাজ চলছে।

Advertisement

এক্সপ্রেসওয়েটি শাহজালাল বিমানবন্দরের পূর্বে কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-মালিবাগ-খিলগাঁও-কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। এক্সপ্রেসওয়ের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার, র‌্যাম্পসহ দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

প্রকল্পের মোট ব্যয় আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। যার ২৭ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার ভিজিএফ হিসেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী বছরের জুন মাসে এক্সপ্রেসওয়ের পুরোপুরি কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন: একনজরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ হাজার যান চলাচল করছে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। টোল আদায় হচ্ছে ২০-২৫ লাখ টাকা।

নির্ধারিত টোল ফি’র মধ্যে রয়েছে, গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) ও হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) জন্য টোল (ভ্যাটসহ) ৮০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের জন্য (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা। ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৪০০ টাকা। আর সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) জন্য টোল ১৬০ টাকা। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পথচারী, বাইসাইকেল, থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ।

আরএসএম/জেডএইচ/এএসএম