দেশজুড়ে

শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে রিকশাচালককে তুলে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে শ্রমিক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম লেদু মালের বিরুদ্ধে মাসুদ নামে এক রিকশা চালককে মারধরসহ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদীর কাছে লেদু মালসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন মাসুদ।

Advertisement

ঘটনাটি সমাধানের জন্য লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানকে অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী মাসুদ লিখিত অভিযোগ করেন।

লেদু মাল রামগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক লীগের একাংশের আহ্বায়ক। তিনি স্থানীয় এমপি আনোয়ার হোসেন খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ভুক্তভোগী মাসুদ রামগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধুপুর এলাকার লেদু মিয়ার ছেলে। তিনি রিকশা চালানোর পাশাপাশি গরুর খামার ও কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

Advertisement

অভিযোগ সূত্র জানায়, মাসুদের পাশের বাড়ির সনাতন ধর্মালম্বী পলাশের সঙ্গে লেদু মালের সম্পর্ক রয়েছে। তারা (পলাশ, লেদু) মাদক সেবন ও ব্যবসা করতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে পলাশকে লেদু, তার অনুসারী জসিম ও আরিফ খোঁজাখুঁজি করে আসছেন। প্রায়ই লেদুসহ অন্যরা মাসুদের কাছে পলাশের খোঁজ চাইতেন। গত ১০ আগস্ট বিকেলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে লেদু ও তার অনুসারীরা পলাশের খোঁজে বাড়িতে যান। এ সময় বাড়ি থেকে বের হতেই তারা মাসুদের কাছে পলাশের খোঁজ জানতে চান। পলাশের সন্ধান দিতে পারবেন না জানালে বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে তারা মাসুদকে সুপারি গাছের কাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন।

এ সময় আশপাশের লোকজন বের হলে মাসুদের হাত-পা-মুখ বেঁধে তারা সিএনজিযোগে সোনাপুর বাজারে নিয়ে যান। সেখানে মাসুদের ফোন থেকেই তার স্ত্রী শাহিন বেগমকে ফোন দিয়ে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। তা না হলে মাসুদকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার হুমকি দেয়। এতে মাসুদের স্ত্রী ও বাবা ভয়ে ঘরে থাকা ৮০ হাজার টাকা এনে লেদু মালকে দেন। পরে মাসুদকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিলে হত্যাসহ মাসুদের মরদেহ গুম করার হুমকি দেওয়া হয়।

মাসুদ বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে বেদম পিটিয়ে হাত-পা-মুখ বেঁধে তুলে নেওয়া হয়। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই ৮০ হাজার টাকা নেন। লেদু ও তার অনুসারীদের ভয়ে আমি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তবে শ্রমিক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম লেদু মাল বলেন, ঘটনাটি ভুয়া। আমি এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।

Advertisement

সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, লেদু মালের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ আমি পেয়েছি। অভিযোগটি স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য এমপি মহোদয়কে জানানো হয়েছে। তিনি (এমপি) ঘটনাটি সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন।

কাজল কায়েস/এফএ/এএসএম