ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, সর্দি-জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে রাজবাড়ীতে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। এতে চাহিদা বেড়েছে এনএস ও ডিএনএস স্যালাইনের। ফলে রাজবাড়ীতে স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে।
Advertisement
চাহিদার তুলনায় হাসপাতাল ও ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত স্যালাইন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। কিছু কিছু ফার্মেসিতে স্যালাইন পাওয়া গেলেও তা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে রোগীদের। তারপরও একজনকে একটির বেশি স্যালাইন দিচ্ছেন না ফার্মেসি মালিকরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীতে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১১১ জন। এরমধ্যে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ৩২ জন, পাংশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৫ জন, কালুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন, বালিয়াকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮ জন ও গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয়জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফার্মেসিতে স্যালাইন সংকট প্রকট, বিপাকে ডেঙ্গুরোগীরা
Advertisement
ফার্মেসি মালিক ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, এলসিসহ কাঁচামালের স্বল্পতার কারণে কোম্পানি চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন দিতে পারছে না। সেখানে প্রয়োজন এক ফার্মেসিতে দুই কেস, সেখানে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৫-১০ পিস। যে কারণে তারা জরুরি রোগী ছাড়া একটির বেশি কাউকে দিচ্ছেন না। তবে নির্ধারিত দামেই স্যালাইন বিক্রি করা হচ্ছে বলে তারা জানান।
হাসপাতাল গেটের একটি ফার্মেসিতে স্যালাইন কিনতে এসেছেন সাব্বির শেখ নামের এক যুবক। তার মামা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি।
সাব্বির শেখ জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটির বেশি স্যালাইন দিচ্ছে না। অথচ আমার প্রয়োজন দুটি। রোগী রেখে পরে আবার আসতে হবে।’
স্বামীকে নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে আছেন বিলকিস খাতুন। তার স্বামী প্রথমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। পরে ডেঙ্গুু ধরা পড়ে।
Advertisement
বিলকিস খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেসব ওষুধ লাগছে তার সবই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ বা স্যালাইন দিচ্ছে না। নার্সদের ওষুধপত্র দিতে বললে, তারা বলে হাসপাতালে এগুলো নেই।’
আরও পড়ুন: ঘরে খাবার স্যালাইন তৈরি করার সঠিক উপায়
কথা হয় রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের সামনের মাসুদ ফার্মেসির মাসুদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, চাহিদার চেয়ে এখন অনেক কম ওষুধ পাচ্ছেন। স্যালাইনের সঙ্গে অন্য ওষুধ নেওয়ার শর্ত দিচ্ছে কোম্পানি। যেখানে তার প্রতিদিন ৩-৪ কেস স্যালাইন প্রয়োজন, সেখানে কোম্পানি থেকে পাচ্ছেন মাত্র ৫-১০ পিস। যে কারণে একটির বেশি কোনো রোগীকে দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মো. হান্নান বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে কিছুটা স্যালাইন সংকট রয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটোন বলেন, কিটের তেমন সংকট না থাকলেও এবার স্যালাইনের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ এবার চাহিদা বেশি। এটা শুধু রাজবাড়ীতে না, সারাদেশেই।
এসআর/এএসএম