দেশজুড়ে

চার জেলায় উদ্ধার অভিযান সামলান ৫ ডুবুরি

মাত্র পাঁচজন ডুবুরি দিয়ে চলছে বরিশাল নৌ ফায়ার স্টেশনের অধীনে থাকা ৪ জেলার উদ্ধার অভিযান কার্যক্রম। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

দেশের অন্য যেকোনো বিভাগের চেয়ে নদী-খালের এই জনপদে পানিতে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেশি। হিসাব অনুযায়ী গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত নৌ ফায়ার স্টেশন ঘুরে জানা যায়, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি এই ৪ জেলার বিশাল জলসীমার দুর্ঘটনার কাজে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে রয়েছেন মাত্র পাঁচজন ডুবুরি। নদীপথে কর্মপরিধি বাড়লেও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও উদ্ধার অভিযানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বাড়েনি বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের। ফলে এই জনবল দিয়ে ৪ জেলার নৌ-দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চালানো প্রায় অসম্ভব বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন: ধার করা জাহাজে চলছে বরিশাল নৌ-ফায়ার স্টেশন

Advertisement

বরিশাল নৌ ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র ডুবুরি রাব্বি শেখ জাগো নিউজকে বলেন, বরিশালের ৪ জেলার বিশাল এই জলসীমার জন্য মাত্র একটি ইউনিট রয়েছে। এই ইউনিটের আওতায় ডুবুরি রয়েছেন মাত্র পাঁচজন। অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় সাব স্টেশন থাকলেও সেখানে ডুবুরি নেই। এই ৫ ডুবুরি দিয়ে চার জেলার প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি সাব স্টেশনের কার্যক্রম চালাতে হয়। মাঝে মাঝে পটুয়াখালী ইউনিটে গিয়েও সহায়তা করতে হয়। যা অনেকটা কষ্টসাধ্য। মাঝে মাঝে একই সময়ে দুটি দুর্ঘটনা ঘটলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় পাড়া মহল্লায় পুকুরে খালে বিলে কেউ পড়ে গেলেও সেখানে ২ জনকে ছুটে যেতে হয়। সেসময় কোনো স্থানে নৌ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটলে তখন বাকিদের পক্ষে সামলানো সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে এই গুরুত্বপূর্ণ নদীমাতৃক এলাকায় ডুবুরির সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নদী ফায়ার স্টেশন অফিসার এনামুল হক সুমন জাগো নিউজকে বলেন, ৫ সদস্য নিয়ে আমাদের প্রায় পুরো বরিশাল বিভাগে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হয়। যখন একসঙ্গে একাধিক জেলা থেকে ডাক আসে তখন আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মানুষের জীবন বাঁচাতে ৫ ডুবুরি দিয়েই সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাই।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের ছয় জেলায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন রয়েছে ৩৮টি। এর মধ্যে বরিশাল ও পটুয়াখালীতে রয়েছে দুটি নদী ফায়ার স্টেশন। এই দুটি স্টেশনের আওতায় রয়েছেন মাত্র সাতজন ডুবুরি। এছাড়া বিভাগের অন্য কোনো স্টেশনে ডুবুরি নেই।

Advertisement

অথচ ফায়ার সার্ভিসের চাহিদা অনুসারে উপকূলীয়, দ্বীপ উপজেলা এবং আয়তন বিবেচনা করে কমপক্ষে ১০টি নদী স্টেশন দরকার এই বিভাগে। এর মধ্যে বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালি এবং ভোলা জেলা পুরোপুরি নদীবেষ্টিত হওয়ায় এসব স্থানে পর্যাপ্ত ডুবুরি, সরঞ্জাম ও যানবাহন পূর্ণ সক্ষমতাসম্পন্ন নদী স্টেশন স্থাপনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে তারে আটকে আছে অত্যাধুনিক আগুন নেভানোর গাড়ি

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. বেল্লাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, নদী স্টেশনকে আরও শক্তিশালী করতে জনবলসহ বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জামের চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি এগুলোও দ্রুত পাবো। চাহিদা অনুসারে লোকবল ও সরঞ্জাম এলে মানুষের বিপদে, উদ্ধার অভিযানে আরও বেশি সফলতা অর্জন করতে পারবে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।

এফএ/এএইচ/এএসএম