গণমাধ্যম

অনলাইনে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও দেশীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত এক হাজার ৮২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানার। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

Advertisement

রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেকে গত আট মাসে রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ২৪৮টি ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ২৩ শতাংশ। গত বছর রাজনৈতিক বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ৯২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছিল সংস্থাটি। এ বছর প্রথম পাঁচ মাসেই ছাড়িয়ে গেছে সেই সংখ্যা।

আরও পড়ুন: গুজব প্রতিহতে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ 

রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণ বলছে, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় চলতি বছর ইন্টারনেটে রাজনৈতিক বিষয়ক ভুল তথ্যের হার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জড়িয়ে গত আট মাসে ৭৪টি ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ মিলেছে। নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি গণমাধ্যম, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তাদের নেতৃত্বকে উদ্ধৃত করে বা জড়িয়ে ভুয়া মন্তব্য বা তথ্য প্রচারের প্রবণতাও লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার, যার সংখ্যা ২৪টি। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বাতিল সংক্রান্ত ১৩টি এবং রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য বিকৃত করে ২১টি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।

Advertisement

রাজনৈতিক বিষয়ের বাইরে গত আট মাসে আন্তর্জাতিক বিষয়ে ২২৯টি, খেলাধুলা সংক্রান্ত ১২৩টি, জাতীয় বিষয়ে ১১৬টি, ধর্মীয় বিষয়ে ১১১টি, শিক্ষা বিষয়ে ৮১টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ৬৩টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে ৫০টি, আর্থিক প্রতারণা বিষয়ে ৪৪টি এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে ১৭টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।

আরও পড়ুন: হারুনের পর এডিসি সানজিদাকে রংপুরে বদলির খবর গুজব 

সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ বলছে, গত আট মাসে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪৩টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যা মোট রাজনৈতিক ভুল তথ্যের ১৭ শতাংশ। এছাড়া, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের বিষয়ে ২০টি, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিষয়ে ১৫টি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিষয়ে ১২টি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিষয়ে ১০টি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিষয়ে আটটি, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিষয়ে সাতটি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়ে সাতটি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

এর বাইরে বাংলাদেশ পুলিশের বিষয়ে ১৪টি গুজব ছড়ানোর তথ্য মিলেছে। পুলিশের একক সদস্য হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ৫টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে সাতটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।

Advertisement

আরও পড়ুন: গুজব ছড়িয়ে পুলিশের মনোবল ভাঙার সুযোগ নেই 

২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে ৩৯টি ভুল তথ্য (নকল ফটোকার্ড ২৩টি, গণমাধ্যমের নাম ও লোগো ব্যবহারে নয়টি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম সম্পাদনা করে ভিন্ন শিরোনাম যুক্ত করে সাতটি) প্রচার করা হয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে রাজনৈতিক বিষয়ে ২৭টি, যা মোট সংখ্যার ৬৯ শতাংশ। তবে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত ৬টি।

কেএএ/কেএসআর/জিকেএস