লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দারনা শহরে ঘূর্ণিঝড়ের পর আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। উদ্ধার তৎপরতা যত বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লাশের সারি। ফলে শেষ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন শহরটির মেয়র।
Advertisement
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাতে শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি বাঁধ ভেঙে যায়। তার ফলে হঠাৎ আসা বিশাল জলরাশির তোড়ে ধসে পড়ে নদীপাড়ের বহু ভবন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়িঘরসহ ভেসে যায় ঘুমিয়ে থাকা অসংখ্য পরিবার।
আরও পড়ুন>> লিবিয়ার বন্যায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে দ্বিগুণেরও বেশি
লিবীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট তারেক আল-খারজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ভূমধ্যসাগর পাড়ের শহরটিতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৪০ মরদেহ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৩ হাজার ১৯০ জনকে এরই মধ্যে সমাহিত করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০০ জন বিদেশিও রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই সুদান এবং মিসরের নাগরিক।
Advertisement
লিবিয়ার এই বন্যায় মারা গেছেন ছয় বাংলাদেশিও। এ ঘটনায় নিখোঁজদের মধ্যেও কিছু বাংলাদেশি থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>> লিবিয়ার বন্যায় ৬ বাংলাদেশির মৃত্যু
এদিকে, লিবিয়ার বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী হিচেম আবু চকিউয়াত বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৩০০টির বেশি মরদেহ চিহ্নিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে এবং এমনকি দ্বিগুণও হতে পারে।
দারনার মেয়র আবদুলমেনাম আল-গাইথি সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টেলিভিশনকে বলেছেন, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বলছে, মৃতের সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ হাজারেও পৌঁছাতে পারে।
Advertisement
গত মঙ্গলবার দারনা ছেড়ে বের হতে পারা মাব্রুকা এলমেসমারি নামে একজন সাংবাদিক এই ঘটনাকে ‘বিশাল বিপর্যয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এখানে পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, পেট্রোল নেই। শহরটি পুরো সমান হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন>> লিবিয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লাশের সারি
বন্যার পর থেকে অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, এই সংখ্যা অন্তত পাঁচ হাজার।
লিবিয়ার এই বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্ব। এরই মধ্যে সাহায্য পৌঁছাতে শুরু করেছে দেশটিতে।
দারনার মেয়র জানিয়েছেন, মিসর, তিউনিসিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক এবং কাতার থেকে উদ্ধারকারী দল শহরটিতে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন>> লিবিয়ায় বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ
তিনি বলেন, আমাদের আসলে মরদেহ উদ্ধারের জন্য বিশেষ দল দরকার। আমার আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং পানিতে প্রচুর মরদেহ থাকার কারণে শহরে মহামারি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কেএএ/