জাতীয়

‘এক্সপ্রেসওয়েতে অটোরিকশা চলতে দিলে সময় ও খরচ কমবে’

রাজধানীর যানজট ও নগরবাসীর ভোগান্তি দূর করতে খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। গত ২ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই সাধারণ যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এতে সব ধরনের যানবাহন চললেও মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

Advertisement

ফলে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালকদের আগের মতোই বনানী, মহাখালী, বিজয় সরণি- এই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়েই ফার্মগেট-শাহবাগ এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। এতে দূরত্ব ও সময় এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে। সিএনজিচালকরা জানিয়েছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে পারলে দূরত্ব ও সময় কমে আসতো। এতে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট-শাহবাগ এলাকায় সিএনজি ভাড়াও কমে যেতো।

তারা বলছেন, যানজট নিরসন ও মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করা হয়েছে। কিন্তু সিএনজি চলাচল করতে না দেওয়ায় আগের মতোই পুরো রাস্তা যানজট নিয়েই যেতে হয় ফার্মগেট-শাহবাগ এলাকায়। অথচ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের অনুমতি পেলে দূরত্ব কমা ও সময় বাঁচানোর ফলে কমতো সিএনজি ভাড়া।

আরও পড়ুন: মিনিটে ১৬ গাড়ি ওঠে এক্সপ্রেসওয়েতে

Advertisement

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় সিএনজিচালকদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

কাওলায় সিএনজিচালক মো. করিম জাগো নিউজকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলতে দিলে আমরা অবশ্যই এর ওপর দিয়ে যাবো। গেলে আমাদেরই ভালো, আমরা যানজট থেকে মুক্ত হলাম। এতে আমাদের যেমন সুবিধা, যাত্রীদেরও সুবিধা হবে। যাত্রীরাও চান ওপর দিয়ে যেতে। আমার সময় কমলে ভাড়াও কমবে। এক-দেড় ঘন্টার রাস্তা আমি ২০ মিনিটে চলে গেলাম।

ফার্মগেট এলাকার সিএনজিচালক স্বপন মিয়া বলেন, বিমানবন্দর-উত্তরা যেতে-আসতে অনেক সময় লাগে। আসা-যাওয়ায় দুইটা ভাড়া পেলে তা যদি বড় জ্যাম পড়ে তাহলে এই ভাড়াতেই অনেক সময় চলে যায়। ভাড়া বেশি হলেও তখন পোষায় না। আর ভাড়াতো খুব বেশি নেওয়া যায় না। তাই কম ভাড়া হলেও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে যেতে পারলে সময় কম লাগতো, এতে বেশি ভাড়া পাওয়া যেতো।

জানা গেছে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত। আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯.৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ২ জুন শেষ হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: একনজরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

প্রকল্পটি ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল। মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

প্রকল্পটির বিদ্যমান অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় বাড়ার কারণে প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। একই সঙ্গে সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয়বারের মতো প্রকল্পে সংশোধনী এনে সময় ও ব্যয় আরও বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শতভাগ সম্পন্ন করার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

আরএসএম/বিএ/জিকেএস