বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ভেতর ৮০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন। টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
Advertisement
সচিব বলেন, ডিজাইন অনুযায়ী, টানেলের ভেতর ৮০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলবে। যেহেতু টানেল কনসেপ্ট আমাদের জন্য নতুন, সেজন্য কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। টানেল অন্য যেকোনো ব্রিজ বা সড়কের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হচ্ছে। সেই ধারণা থেকে এই মুহূর্তে বাইক ও থ্রি-হুইলার চালানো টানেলের জন্য নিরাপদ হবে না। এতে টানেলও নিরাপদ থাকবে এবং যারা টানেল ব্যবহার করবেন তারাও নিরাপদ থাকবেন।
আগামী ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে মূল টানেলের কাজ শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, টানেলর প্রকল্প পরিচালক হারুন উর রশিদ, আনোয়ারা উপজেলা চেয়রাম্যান মো. নজরুল ইসলাম। সভায় টানেল উদ্বোধনসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা টানেলে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার চলাচল ও টানেল কার্যক্রম পরিচালনায় লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুন উর রশিদ সভায় বলেন, টানেলের ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল কাজ শেষে হয়েছে। এরপর প্রি কমিশনিং ও কমিশনিং দেখা হয়েছে। পাশাপাশি টানেলের সবগুলো সিস্টেম কাজ করছে কি না, তা কয়েকবার করে দেখা হয়েছে। মূল টানেলের কাজ শতভাগ শেষ। পুরো প্রকল্পের ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন টানেলের এপ্রোচ রোড, সার্ভিস এরিয়া, পুলিশের ফাঁড়ি নির্মাণ ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জানা যায়, টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন সরকার ‘জি-টু-জি’ অর্থায়নে টানেলটি নির্মাণ করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে স্বপ্নের টানেল নির্মাণকাজের যৌথভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা রাষ্ট্রপতি শিং জিনপিং। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ টানেলটির নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।
ইকবাল হোসেন/জেএইচ/জেআইএম
Advertisement