অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন কৃষিজমি থেকে মাটি বা বালু তোলা যাবে না- এমন বিধান রেখে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল–২০২৩’ পাস হয়েছে। তবে ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সীমিত পরিসরে মাটি বা বালু তোলা যাবে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির মালিকানাধীন জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না যদি তা উর্বর কৃষিজমি হয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয় বা কৃষিজমির উর্বর উপরিভাগের মাটি হলে বা পরিবেশ-প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্রের ক্ষতিসাধিত হয় বা ড্রেজারের মাধ্যমে বা যদি অন্য কোনো কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাতে এই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা এক কোটি ৫৫ লাখ
Advertisement
তবে বসতবাড়ি নির্মাণ বা নিজের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নিজের মালিকানাধীন জমি থেকে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, চাঁদপুরের হাইমচরের সেলিম চেয়ারম্যান বালু তোলা নিয়ে ২০১৫ সালে একটি মামলা করেন। ২০১৮ সালে তার রায় হয়। তিনি বালু তোলার অনুমতি পান। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করে। এটা যদি হয় বালু ব্যবস্থাপনার অবস্থা। সেলিম চেয়ারম্যান এরই মধ্যে কত বালু তুলেছেন মন্ত্রী তা জানেন কি না, জানাবেন।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, তড়িঘড়ি করে সংসদে ভূমির তিনটি আইন আনা হয়েছে। এই বিলগুলো নিয়ে সংসদ সদস্যরা পর্যালোচনারও সুযোগ পাননি। সরকার ইচ্ছা করে জনগণ থেকে আড়াল করে আইন করছে।
আরও পড়ুন: সার্কভুক্ত দেশে বাণিজ্য ঘাটতি ২৩ বিলিয়ন ডলার, ভারতের সঙ্গে বেশি
Advertisement
বিভিন্ন পত্রিকার খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশাসন মাসোয়ারা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরও দায় দায়িত্ব আছে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জনস্বার্থে কাজ করছি। এই আইন কঠোর হস্তে প্রয়োগ করা উদ্দেশ্যে। বালু নিয়ে অনেক সমস্যা। সে কারণে আইনে ফাঁকফোকর ছিল। প্রশাসন চাইলেও অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে পারতো না। এবার ফাঁকফোকর বন্ধ করা হয়েছে। মাঠপ্রশাসন কঠোর হাতে মাটি বালু উত্তোলনের বিষয়ে কাজ করতে পারবে। উদ্দেশ্য কৃষিজমির সুরক্ষা। ইটভাটা টপ সয়েল নষ্ট করে দিচ্ছে। এই আইন হলে মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে।
আইএইচআর/জেডএইচ/এএসএম