জাতীয়

এপিএস মামুনই এডিসি হারুনের ওপর প্রথম হামলা করেন

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের ওপর প্রথমে হামলা চালিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুন। এমন অভিযোগ উঠেছে বলে দাবি করছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

Advertisement

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন: ‘মুখে কাপড় বেঁধে ও নেমপ্লেট খুলে থানায় মারধর করে পুলিশ’

ডিবিপ্রধান বলেন, উনি (এপিএস মামুন) একজন সরকারি কর্মকর্তা। পুলিশের ওপর প্রথম হামলাটা তিনিই করেছিলেন। তিনি ইচ্ছা করলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন। অথবা তারও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিল তাদের অবহিত করতে পারতেন। কিন্তু উনি তা না করে হাসপাতালের ভেতরে অসুস্থ মানুষের সামনে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ধাওয়া করেন। তার চশমা ভেঙে ফেলেন, তার ওপর আঘাত করেন। এটা সঠিক করেছেন কি না তা আমি জানি না, তবে এর তদন্ত হওয়া উচিত।

Advertisement

থানায় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতাল থেকে বলে জানান তিনি।

ডিবিপ্রধান বলেন, পুলিশ কখনো ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের দায় নেয় না। আমি মনে করি এ ঘটনায় স্বাধীনভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সঠিকভাবে ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে তদন্ত করছে। তদন্ত প্রতিবেদন শিগগির দেবে। তখন আসল ঘটনা জানতে পারবো আমরা।

আরও পড়ুন: এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে যত ‘পেটানোর অভিযোগ’

এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর রাতে শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের তিন নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

আহত তিন নেতা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।

এ ঘটনার জেরে ওইদিন রাতেই শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে মীমাংসা করেন।

আরও পড়ুন: এডিসি হারুনের পরিবারের রাজনীতি নিয়ে ধোঁয়াশা!

ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে এক নারীর সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন এডিসি হারুন। সেসময় ওই নারীর স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান এবং তাদের দুজনকে একসঙ্গে পান।

সেখানে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ ফোর্স নিয়ে এসে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে বেদম মারধর করেন এডিসি হারুন অর রশিদ। এরপর ছাত্রলীগের আরেক নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈম থানায় গেলে তাকেও নির্যাতন করা হয়।

সেদিনের ভয়াবহ নির্যাতনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে আনোয়ার হোসেন নাঈম জাগো নিউজকে জানান, এডিসি হারুনের সঙ্গে তার কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক মামুন তার এলাকার বড় ভাই। তাদের বাড়ি গাজীপুরে। মামুনের ফোন পেয়ে থানায় যান নাঈম। থানায় গিয়ে ওসি-তদন্তের কক্ষে প্রবেশ করে ছাত্রলীগের পরিচয় দেওয়ার পরপরই এডিসি হারুন তার ওপর হঠাৎ আক্রমণ করেন। মোস্তফা নামে একজন তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন, তিনিও অনেক মারধর করেন। একপর্যায়ে মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলেন। নিচে পড়ে যাওয়ার পর অস্ত্রের বাট দিয়ে ঠোঁট থেতলে দেওয়া হয়। ছাত্রলীগ পরিচয় দেওয়ার পরই মূলত এডিসি হারুন বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

টিটি/জেডএইচ/জেআইএম