খেলাধুলা

রোনালদোকে ছাড়াই লুক্সেমবার্গের জালে পর্তুগালের ৯ গোল!

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো খেলতে পারেননি। আগের ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে আপাতত এই ম্যাচের জন্য তিনি ছিলেন নিষিদ্ধ। কিন্তু এখন হয়তো আফসোসে পুড়বেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ১২৩ গোলের মালিক এই ম্যাচ খেলতে পারলে হয়তো তার এই সংখ্যাটাকে আরও সমৃদ্ধ করে নিতে পারতেন।

Advertisement

ইউরো বাছাই পর্বে লুক্সেমবার্গকে যেভাবে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে পর্তুগাল, তা রীতিমত বিস্ময়কর। রোনালদোকে ছাড়াই লুক্সেমবার্গের জালে গুনে গুনে ৯বার বল জড়িয়েছে পর্তুগিজরা। তারা প্রমাণ করে দিয়েছে, গোল বন্যায় প্রতিপক্ষকে ভাসাতে রোনালদোর প্রয়োজন নেই। অথচ, ব্যক্তিগতভাবে লুক্সেমবার্গের বিপক্ষেই সবচেয়ে বেশি, ১১টি গোল করেছিলেন রোনালদো।

সে সঙ্গে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে নতুন রেকর্ডও তৈরি করে নিয়েছে পর্তুগাল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটাই এখন পর্তুগিজদের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। এর আগে তাদের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড ছিল ৮- ০ গোলের। তিনবার এই ব্যবধানে জিতেছিলো তারা। দু’বার প্রতিপক্ষ ছিল লিখেনস্টেইন (১৯৯৪ এবং ১৯৯৯ সালে)। আরেকবার জিতেছিলো কুয়েতের বিপক্ষে (২০০৩ সালে)।

পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীকে ছাড়া লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে পর্তুগালের হয়ে ৯ গোল করেছেন গনকালো ইনাসিও, গনকালো রামোস, দিয়োগো হোতা, রিকার্ডো হোর্তা, ব্রুনো ফার্নান্দেজ এবং হোয়াও ফেলিক্স। এর মধ্যে জোড়া গোল করেছেন গনকালো ইনাসিও, গনকালো রামোস এবং দিয়েগো হোতা।

Advertisement

এ নিয়ে ইউরো বাছাই পর্বে টানা ৬টি ম্যাচ জিতেছে পর্তুগাল। অন্য কোনো দল এভাবে টানা ৬টি ম্যাচ কখনো জিততে পারেনি। ‘জে’ গ্রুপে ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে শীর্ষে। ৬ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ২৪টি গোল দিয়েছে পর্তুগিজরা। কিন্তু একটি গোলও হজম করেনি। এই গ্রুপে ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্লোভাকিয়া। গ্রুপের সেরা দুটি দলই খেলবে ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে।

ম্যাচের ১২তম মিনিটে গোল উৎসব শুরু করে পর্তুগাল। ডিফেন্ডার গনকালো ইনাসিও গোল করে প্রথমে এগিয়ে দেন নিজের দলকে। ১৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন গনকালো রামোস। ৩৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন রামোস। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে (৪৫+৪ মিনিট) দলের হয়ে চতুর্থ গোল করেন ইনাসিও। সে সঙ্গে হলো তার নিজের দ্বিতীয় গোল।

প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও গোল উৎসব অব্যাহত রাখে পর্তুগিজরা। ৫৭তম মিনিটে দলের পঞ্চম গোল করেন দিয়োগো হোতা। ৬৭ মিনিটে ব্যবধান ৬-০ করে ফেলেন রিকার্ডো হোর্তা। ৭৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ৭ম গোল করেন দিয়োগো হোতা।

৮৩ মিনিটে ৮ম গোল আসে ব্রুনো ফার্নান্দেরজের কাছ থেকে। ৮৮তম মিনিটে রেকর্ড গোলটি করেন হোয়াও ফেলিক্স। গনকালো রামোসের পরিবর্তে ৬১তম মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন ফেলিক্স। তার গোলেই রেকর্ড জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পর্তুগিজরা।

Advertisement

ম্যাচের পর কোচ রবার্তোর মার্টিনেজ বলেন, ‘এটা ছিল পারফেক্ট একটি ম্যাচ। কারণ খেলোয়াড়দের মানসিকতা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি একই ছিল। তারা শুধু আক্রমণ শানিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি, নিজেদেরকে কিভাবে রক্ষা করা যায় এবং দলকে কিভাবে ক্লিনশিট রাখা যায়, সেদিকেও নজর দিয়েছিলো তারা। কোচ হিসেবে আমি এধরনের মানসিকতাই পছন্দ করি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে। তারা পর্তুগালের ফুটবল ইতিহাসে নিজেদের জায়গা করে নিলো।’

আইএইচএস/