দেশজুড়ে

অন্ধকার কবরে কীভাবে থাকবে, আমার কাছে আসো মা

বাড়ির উঠোনে সাদা প্যাকেটে ভরা শিশু জান্নাতি খাতুনের (৬) মরদেহ। চারিদিকে ঘিরে আছে প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরা। পাশেই দাঁড়িয়ে পুলিশ সদস্যরা। একটু দূরে বারান্দায় মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন শিশু জান্নাতির মা স্বপ্না খাতুন।

Advertisement

আহাজারি করতে করতে স্বপ্না খাতুন বলছিলেন, ‘মা তুমি ওখান থেকে উঠে আমার কোলের মধ্যে আসো। তুমি অন্ধকার কবরে কীভাবে থাকবে মা।’

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নিহত শিশু জান্নাতি খাতুনের বাড়িতে দেখা যায় এমন চিত্র। শোনপাপড়ি কিনতে বাড়ির পাশের রাস্তায় গিয়ে নিখোঁজ হয় জান্নাতি। পরে ১১ ঘণ্টা পর বাড়ির পাশের ডোবায় পাওয়া যায় তার মরদেহ।

জান্নাতি শৈলকুপা উপজেলার ১২ নং নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের বাগুটিয়া গ্রামের খোকন ভূইয়ার কন্যা। এ বিষয়ে খোকন ভূইয়া বলেন, জান্নাতি সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে রাস্তার ধারে শোনপাপড়ি কিনতে যায়। এরপর জান্নাতি আর বাড়ি ফিরে আসেনি। বাড়ির পাশের বিভিন্ন পুকুরে সারাদিন তাকে খোঁজ করে পাওয়া না গেলে শৈলকুপা থানায় একটি জিডি করি। হঠাৎ রাত সাড়ে ১০টার দিকে জান্নাতির মরদেহ বাড়ির পাশের একটি ডোবায় ভাসতে দেখি।

Advertisement

তিনি বলেন, ওই ডোবায় মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। তাহলে রাতে মেয়ের মরদেহ কীভাবে এলো? জান্নাতির ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কপালে আঘাতের দাগ রয়েছে। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লুকিয়ে রাখা হয় বলে ধারণা করছি। এরপর রাতের যেকোনো সময় মরদেহ ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়েছে।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, বাগুটিয়া গ্রামের ডোবা থেকে জান্নাতি নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার হাতে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কী দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তা এখনই বলতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহত শিশুটির শরীরে আমরা কোনো ধর্ষণের আলামত পাইনি। মরদেহ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই বলা যাবে বিস্তারিত।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/কেএসআর

Advertisement