পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক উল্লেখ করে তুলা, সুতা ও পাটের বর্জ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের স্থল শুল্ক (কাস্টমস) দপ্তর। ফলে পাঁচ মাস ধরে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ আছে।
Advertisement
সোমবার (১১সেপ্টম্বর) বিকেলে বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার আব্দুল আলীম বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ভারতের কাস্টম থেকে একটি চিঠি ইস্যু করেছে পরিবেশের কোনো আপত্তি আছে কি না। পরিবেশের আপত্তি না থাকলে এটা ছাড় যোগ্য হবে। এদিকে দুদেশের ইমপোর্টার ও এক্সপোর্টার মাল পাঠাচ্ছে না। পরিবেশের ছাড়পত্রের বিষয়ে সমাধান হলে আবারো অবশ্যই রপ্তানি হবে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল কাস্টমসের লকারকাণ্ড, ৪ বছরেও অধরা ১৯ কেজি সোনা লুটের রহস্য
Advertisement
চ্যাংড়াবান্ধা কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, দেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া পণ্যগুলো আমদানি করতে দেবে না কাস্টম। ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা কাস্টম কর্তৃপক্ষ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বা সনদপত্র ছাড়া তুলা, সুতা ও পাটের বর্জ্য আমদানি করতে নিষেধ করেছে। শুরু থেকে এসব পণ্য অনেক ছোট-বড় আমদানিকারক আমদানি করে আসছে বর্তমানে অন্য বন্দর দিয়ে এসব প্রবেশ করলেও বুড়িমারী স্থলবন্দরে বন্ধ আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে চালু হয় বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশন ও স্থলবন্দর। শুরু থেকে এ স্থলবন্দর হয়ে ভারতে তুলা, সুতা ও পাটের বর্জ্য রপ্তানি হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ৩০ ট্রাক তুলা, সুতা ও পাটের বর্জ্য এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের রপ্তানিকারকরা জানান, ১২ এপ্রিল ভারতের আমদানিকারকরা জানায়- এ স্থলবন্দর দিয়ে আর ওই ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতি দিচ্ছে না চ্যাংড়াবান্ধা কাস্টম। ভারতীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে এসব বর্জ্য যেকোনো দেশ থেকে আমদানি করা যাবে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের রপ্তানিকারক মেসার্স বন্ধু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, তুলা, সুতা ও পাটের রপ্তানি পাঁচ মাস ধরে বন্ধ আছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: ১১০০ কোটি টাকায় প্রশস্ত হচ্ছে বারইয়ারহাট-রামগড় সড়ক
বুড়িমারী স্থলবন্দরে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী বকুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গার্মেন্টের অব্যবহৃত তুলা, সুতা ও পাটের বর্জ্য বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হতো। গত পাঁচ মাস ধরে রপ্তানি বন্ধ আছে। বিষয়টি নিয়ে দুদেশের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আশা করি আবারো রপ্তানি করা যাবে।
পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি রুহুল আমীন বাবুল জাগো নিউজকে বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দরের শুরু থেকে তুলা ও সুতার বর্জ্যসহ বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হতো। কিন্তু হঠাৎ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সে দেশে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা রংপুর কাস্টম কমিশনারকে বিষয়টি জানিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এসজে/জেআইএম