একটি শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হচ্ছে তার বাবা-মা। সেই রক্ষকই যখন ভক্ষক হয় তার থেকে বেদনার আর কিছুই হতে পারে না। বিশ্বের এমন কিছু প্রাণী আছে যারা সন্তানকে হত্যা করে। অনেকে আবার সন্তান জন্মের পর পরই তাকে হত্যা করে খেয়ে ফেলে। এমন বৈশিষ্ট্য অনেক প্রাণীর মধ্যেই দেখা যায়।
Advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের সন্তান হত্যার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। কিছু প্রাণী খাদ্যের অভাবে ঘাতক হয়ে ওঠে। আবার সন্তানের ভালোর জন্যও কাজটি করে থাকে। আসুন এমন কয়েকটি প্রাণীর কথা জেনে নেওয়া যাক-
পোলার বিয়ারপোলার বিয়ার মূলত মেরু অঞ্চলের একটি প্রাণী। এরা মোটেই মাংসাশী প্রাণী নয়। তবে সম্প্রতি দেখা গেছে যে, তারা ছোট প্রাণী শিকার করে খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তারা তাদের নিজের সন্তানকে জন্ম দেওয়ার পরই ছোট থাকা অবস্থাতেই মেরে খেয়ে ফেলে। মূলত ক্ষুধা মেটাতেই তারা এমনটা করছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: বিশ্বের যেসব স্থানে জন্ম-মৃত্যু নিষিদ্ধ
Advertisement
জলহস্তীজলহস্তী সাধারণত তৃণভোজী। তবে গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে, তারাও তাদের সন্তানদের হত্যা করে। কিন্তু তাদের খেয়ে ফেলে না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু কিছু জলহস্তী এমনো আছে, যারা মাংসাশী। মূলত পুরুষ জলহস্তীরাই এমন আচরণ করে থাকে। ছেলে সন্তান জন্মালেই তাকে হত্যা করে। তারা নিজের পুত্র সন্তানকেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করে। এজন্যই পুত্র সন্তান জন্মালেই বাবা জলহস্তী তাকে হত্যা করে।
ইঁদুরএমনকি ইঁদুরও নিজের বাচ্চাদের মেরে খেয়ে ফেলে। তারা যখন তাদের সন্তানদের মধ্যে কোনো ধরনের শারীরিক ঘাটতি লক্ষ্য করে, তখনই তারা এটি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এদের কারণটি অনেক ক্ষেত্রেই আলাদা।
কাঁকড়াএকটি স্ত্রী কাঁকড়া একসঙ্গে ১০০টি বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। যখন সে খাওয়ার জন্য উপযুক্ত খাদ্য পায় না। তখন সে তার বাচ্চাদের খেতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের যে স্থানের মানুষ এখনো পোশাক পরেন না
Advertisement
হ্যামস্টারতালিকার শীর্ষে রয়েছে মহিলা হ্যামস্টার। এরা কখনও কখনও তাদের বাচ্চাদের জন্ম দিয়েই মেরে ফেলে। তারপর খাওয়া শুরু করে। সে এটা তখনই করে, যখন সে মনে করে তার সন্তানটিকে অন্য প্রাণী খেয়ে ফেলবে। অর্থাৎ, যখন সে মানসিক চাপে থাকে বা কোনো কিছুকে ভয় পায়। পরিবেশ শিশুদের জন্য অনুকূল হবে না বলে মনে করলে, সেক্ষেত্রেও তারা তাদের সন্তানদের হত্যা করে। এছাড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার পর স্ত্রী হ্যামস্টারের শরীরে অনেক ভিটামিন এবং খনিজের অভাব দেখা দেয়। সেগুলো মেটাতেও তারা এই কাজটি করে।
শিম্পাঞ্জিশিম্পাঞ্জি সন্তানকে হত্যা করে খাওয়ার জন্য নয়। এরা তৃণভোজী প্রাণী। মূলত পুরুষ শিম্পাঞ্জিটিই এমন আচরণ করে। যখন সে মনে করে এই সন্তান তার না তখন সেই সন্তানকে মেরে ফেলে।
সিংহসিংহদের মধ্যে এই ঘটনা খুবই সাধারণ। নিজের আদিপত্য যেন কমে না যায় বা অন্য কেউ যেন সেখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য নিজের সন্তানকেই মেরে খেয়ে ফেলে। নিজের সন্তানকেই প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে সিংহরা। বিশেষ করে পুরুষ সিংহ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ওয়াইল্ডলাইফ ইনফরমার
কেএসকে/এএসএম