অবশেষে দ্বার খুলছে বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের। যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের রেলপথ যোগাযোগের নতুন মাত্রা। কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি রেলপথটির উদ্বোধন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Advertisement
এই রেলপথ চালুর পর দুই দেশের যোগাযোগব্যবস্থা যেমন সহজ করবে, তেমনি গতি আসবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। তবে কবে থেকে নিয়মিত এই পথে ট্রেন ছুটবে, তা এখনো নির্ধারণ হয়নি।
কয়েক দফায় প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হলেও বাড়েনি ব্যয়। বাংলাদেশ অংশের রেলপথের নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এ রেলপথ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশের রেলপথের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতকে যুক্ত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া এবং ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে পাঁচ বছরেরও বেশি। আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে শুরু হয়ে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর গিয়ে শেষ হয়েছে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথ। ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলপথের বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। রেললাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কয়েক দফায় এই রেললাইনে চালানো হয়েছে ট্র্যাক কার। এখন উদ্বোধন ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
Advertisement
আরও পড়ুন: আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে প্রথমবারের মতো চললো ট্র্যাক কার
জানা গেছে, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবন এবং প্ল্যাটফর্মের ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি রয়েছে, যা শেষ করতে সময় লাগবে আরও মাস দেড়েক। এছাড়া নিশ্চিন্তপুর থেকে আগরতলা রেলস্টেশন পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার অংশে রেলপথ তৈরির কাজও পুরোপুরি শেষ হয়নি। ফলে আপাতত গঙ্গাসাগর থেকে নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত চলবে ট্রেন। পরবর্তীতে আগরতলা রেলস্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে রেলপথটি।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের বাংলাদেশ অংশটুকু ডুয়েলগেজ হলেও ভারতের অংশটুকু মিটারগেজ। এর ফলে আপাতত মিটারগেজ ট্রেন চলবে এ রেলপথে। তবে অচিরেই ভারতের অংশটুকুও ব্রডগেজে রূপান্তর হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই রেলপথ কলকাতার সঙ্গে আগরতলার দূরত্ব কমাবে প্রায় ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: আরও এক বছর সময় বাড়লো আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণে
Advertisement
রেলপথ নির্মাণকারী ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার শরৎ শর্মা জানান, সম্পূর্ণ কাজ উদ্বোধনের পর শেষ হবে। এখনো কিছু ভবনে ইন্টরিয়রের কাজ বাকি আছে।
তবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ প্রস্তুত থাকায় ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। আর রেলপথে পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় প্রসার ঘটবে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এমআরআর/এমএস