আন্তর্জাতিক

‘সিঙ্গেল’ পুরুষদের আশ্রয় দেবে না বেলজিয়াম

অবিবাহিত বা সঙ্গীবিহীন পুরুষদের আপাতত আশ্রয় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেলজিয়াম। এ নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে ইউরোপীয় দেশটি। বেলজিয়ান সরকারের যুক্তি, অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে প্রথমে পরিবার, নারী ও শিশুরা প্রাধান্য পাবে, তারপর বাকিরা। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে বিভিন্ন মহল।

Advertisement

হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বেলজিয়ামে সুরক্ষার সন্ধান করলেও তাদের ঠিকমতো আশ্রয় দিতে ব্যর্থ প্রশাসন। ব্রাসেলসের প্রধান প্রসেসিং সেন্টারের বাইরের রাস্তায় তাঁবুর দীর্ঘ লাইন দেশটির সুনাম নষ্ট করছে বললে ভুল হবে না।

আরও পড়ুন>> ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে হু হু করে, এগিয়ে বাংলাদেশিরা

এই পরিস্থিতিতে বেলজিয়ামের রাষ্ট্রীয় আশ্রয় ও অভিবাসন মন্ত্রী নিকোল ডি মুর গত সপ্তাহে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, শিশু রয়েছে, আপাতত শুধু এমন পরিবারগুলোর জন্য ফাঁকা জায়গাগুলো বরাদ্দ করা হবে।

Advertisement

তিনি বলেন, পরিবার এবং শিশু অভিবাসীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই শীতকালে শিশুদের রাস্তায় থাকা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আরও পড়ুন>> ইউরোপে আশ্রয়প্রার্থীদের কোন দেশ কত টাকা দেয়?

ইইউ এজেন্সি ফর অ্যাসাইলামের তথ্যমতে, গত বছর ২৭ দেশের এই জোট এবং সহযোগী দেশগুলোতে আশ্রয় আবেদনকারীদের মধ্যে ৭১ শতাংশই ছিলেন পুরুষ। আর বছর শেষে ঝুলে ছিল অন্তত ৬ লাখ ৩৬ হাজার আবেদন।

বেলজিয়ান সরকারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে অধিকার সংগঠনগুলো। এমনকি এর নিন্দা জানিয়েছেন দেশটিরই কিছু আইনপ্রণেতা।

Advertisement

বার্তা সংস্থা বেলগার প্রতিবেদনে অনুসারে, বেলজিয়ান সরকারের এই সিদ্ধান্তে গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন জোটের শরিক গ্রোয়েন পার্টির সদস্য ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী পেট্রা ডে সাটার। তিনি বলেছেন, ডি মুর যা যে নীতির আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমাদের দেশ দীর্ঘদিন ধরে সেটিরই নিন্দা করে আসছে।

আরও পড়ুন>> গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই মারা যাবে ৪ লাখ বিদেশি

ইউরোপীয় কাউন্সিলের মানবাধিকার কমিশনার দুনিয়া মিয়াতোভিচ বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, বেলজিয়ামে আশ্রয়প্রার্থীদের মানবাধিকার তো বটেই, তাদের স্বাস্থ্যের অধিকারের ক্ষেত্রেও গুরুতর প্রভাব ফেলেছে আবাসনের অভাব।

১ কোটি ১৫ লাখ মানুষের দেশ বেলজিয়ামের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয়প্রার্থীদের ভিড় উপচে পড়ছে। ডি মুর অভিযোগ করেছেন, গত দুই বছরে দেশটিতে অভিবাসীদের ঢলের কারণে প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ ধারণক্ষমতার আশ্রয়কেন্দ্রে আর একটুও জায়গা নেই।

আরও পড়ুন>> যুক্তরাজ্যে দ্বৈত নাগরিকত্বে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের

গত বছর বেলজিয়ামে সুরক্ষার জন্য প্রায় ৩৭ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ফেডাসিল।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বেলজিয়াম পরিচালক ফিলিপ হেনসম্যানস অভিযোগ করেছেন, বেলজিয়াম সরকার শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তা নয়, একক পুরুষ আশ্রয়প্রার্থীদের অভ্যর্থনা স্থগিত করে বিষয়টি রীতিমতো সমাধিস্থ করে ফেলেছে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে, ইনফো মাইগ্রেন্টসকেএএ/