দেশজুড়ে

কুমিল্লায় বিড়ালপ্রেমীদের আস্থার নাম ‘ক্যাটস হোম’

কুমিল্লার বিড়ালপ্রেমীদের জন্য বিশ্বস্ত একটি নাম ‘ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ি’। বিড়ালপ্রেমীরা কোথাও বেড়াতে গেলে তাদের পোষ্য প্রাণীটি রেখে যান এ বাড়িতে। এজন্য তাদের দিতে হয় না কোনো খরচ।

Advertisement

প্রতি মাসে পোষ্য বিড়ালদের চিকিৎসায় একজন পশুচিকিৎসক বসেন সেখানে। নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়। বর্তমানে এ ক্যাটস হোমে নবাব, সিম্বা, পেজকুনি, পুষ্প, রুড গুলিত, ব্যানজামা, ভিনিসিয়াস, জ্যাক, মিনু, ডিউক, ক্যামেলিয়া, রোনালদো, প্রিসিলা, এমবাপে, মুয়েজ্জা ও কয়েকজন অতিথিসহ ২০ জন সদস্য রয়েছে।

নগরীর নজরুল অ্যাভিনিউ নাছির টাওয়ারে ‘ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ি’ অবস্থিত। সেখানে কথা হয় বিড়ালপ্রেমী লাকি রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কুমিল্লায় বিড়ালের ভালো চিকিৎসক নেই বললেই চলে। তাছাড়া সার্জারি করার মতো ভেটেরিনারি চিকিৎসকও পাওয়া যেত না। ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ি প্রতিষ্ঠার পর আমাদের আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। যেকোনো সমস্যায় তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও চিকিৎসা নিয়ে থাকি। এতে কুমিল্লা নগরীতে এখন আর কোনো কুকুর-বিড়ালকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয় না।

শায়লা শিলা নামের এক নারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘নগরীতে বিড়াল-কুকুরকে অসহায় অবস্থায় দেখলে আমি উদ্ধার করি। উদ্ধারের পর এদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন ছিল। বর্তমানে এসব পশু ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়িতে নিয়ে বিনা পয়সায় চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছি। এতে আমি আনন্দিত।’

Advertisement

‘ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ি’র প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন রনী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি বিড়াল দত্তক দেওয়া হবে, এমন একটি পোস্ট দেখে বিড়াল পালার শখ হয়। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘নবাব’ ও ‘সিম্বা’ নামের বিড়াল দুটি দত্তক নিয়ে শুরু করি বিড়াল পোষা। প্রথমদিকে শখের বসে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, সাভারের বিরুলিয়া, মিরপুর শেওড়াপাড়া থেকে কয়েকটি বিড়াল সংগ্রহ করি। তবে কিছু মানুষের অনুরোধ রাখতে গিয়ে বর্তমানে বিড়ালের সংখ্যা দাঁড়িয়েয়ে ১৫টিতে।

তিনি বলেন, বিপদগ্রস্ত বিড়ালের অভিভাবকরা তাদের প্রিয় পোশা প্রাণীটি আমাদের এখানে রেখে যান নিরাপদ আশ্রয় ভেবে। এজন্য থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসা বাবদ তাদের কোনো ফি দিতে হয় না। মানবিক কারণে আমি এ সেবাটি দিয়ে থাকি।’

সারাদেশে অসহায় প্রাণী উদ্ধারে অনেক টিম কাজ করছে। অনেক জায়গায় টিমের স্পন্সর থাকলেও কুমিল্লায় কাজ করা টিমের তেমন স্পন্সর নেই। অর্থের অভাবে তারা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে পারেন না। নিজস্ব অর্থায়নে অবহেলিত পশুগুলো উদ্ধার কাজ করতে হয়। বিত্তবানদের প্রতি উদ্ধার টিমকে স্পন্সর করে অসহায় পশু-প্রাণীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান দৃষ্টান্ত ফাউন্ডেশন কুমিল্লা ও ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ির সাইফ উদ্দিন রনী।

চিকিৎসক (ভেট) মারুফ হাসান ইমরান জাগো নিউজকে বলেন, পোষা প্রাণীদের প্রতি সাইফ উদ্দিন রনী ভাইয়ের অগাধ ভালোবাসা দেখে মানবিক কারণে আমি উনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। নিজের কষ্টের কথা বলতে না পারা এ অসহায় প্রাণীরা যেন বিনা চিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসায় মারা না যায় সে কথা মাথায় রেখেই কাজ করছি। প্রতি মাসে একদিন কুমিল্লা সেন্টারে আমি সময় দিয়ে থাকি।

Advertisement

এসআর/জিকেএস