প্রত্যেক বাবা-মায়েরাই চান সন্তানের সাফল্য। তাদের চেয়ে আপন আর কে আছে? সন্তান যেন সফল হতে পারে, সেজন্য সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও অনেক কিছু করার চেষ্টা করেন।
Advertisement
তবে এই সাফল্য চাওয়া কখনো কখনো অসুস্থ প্রতিযোগিতায় রূপ নেয়। অভিভাবকরা শিশুদের রেসের ঘোড়া বানিয়ে ফেলেন। তারা চান তাদের ঘোড়া দৌড়ে জয়ী হবে, উজ্জ্বল করবে বাবা-মায়ের মুখ।
আরও পড়ুন: যমজ বাচ্চা হবে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
অন্য কারও অর্জনকে দেখিয়ে কেউ কেউ চান তার সন্তানও তাদের মতো বড় হোক। আর এখান থেকেই শুরু হয় তুলনা। তাদের মতো হতে হবে। সে ভাত খায়, তুমিও খাও তাই তোমাকেও করে দেখাতে হবে।
Advertisement
তোমার বন্ধু ক্লাসে প্রথম হয়েছে তুমি কী করলে? তোমার জন্য কারো সামনে আমি মুখ দেখাতে পারছিনা। তুমি সব জেনেও কেন প্রথম হতে পারলে না? তবে এসব কথার ধরন সব সময় কঠিন।
আপনার উদ্দেশ্য হয়ত সন্তানকে বোঝানো আঘাত করা নয়। তবে মনের দুঃখে অজান্তেই বলে ফেলে লাভের থেকে ক্ষতি বেশি করে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর কাছে কোন ৫ জিনিস কখনো লুকাবেন না
প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থাকা ভালো। পরীক্ষায় ফলাফল ভালো করার, নিজেকে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা যোগাতে এটি আবশ্যক। তবে সেই প্রতিযোগিতা আনন্দদায়ক, উৎসবমুখর হওয়া চাই।
Advertisement
তবে হেওভাবে তুলনা শিশুর মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তার মধ্যে বাঁধতে পারে আত্মবিশ্বাসের অভাব। আঘাত হানতে পারে শিশুর আত্মসম্মানেও।
‘অন্যরা আমার থেকে বেশি যোগ্য’ বাক্যটি শিশুর নরম মনে একবার বসে গেলে সেই দাগ তোলা কঠিন। এই বিষয়গুলো শিশুকে আগ্রাসী ও বৈরি মনোভাবাপন্ন করে তুলতে পারে। যা শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশেও বাধা হয়ে দাড়ায়।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে ১০টি কথা মনে রাখলে সফল হবেন
প্রতিটি শিশুর প্রতিভা, আগ্রহ ও সামর্থ্যের জায়গা ভিন্ন থাকাটাই স্বাভাবিক। সবায় বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা পাইলট হবেন এমনটা নয় কেউ কেউ বিলগেটস, ইলন মাস্ক, মার্ক জাকারবার্গও হন।
প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত সেই প্রতিভা ও আগ্রহের জায়গা খুঁজে বের করা, তাদের চিন্তাধারা বোঝার চেষ্টা করা। শিশুদের গঠনমূলক চিন্তা করতে সাহায্য করা ও নিজেরাই যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেই কাজে বাবা-মায়ের পাশে থাকা।
এতে যে কোনো শিশুই জীবনে বড় কিছু করতে পারবে। সন্তানকে শেখাতে হবে ‘একবার না পাড়িলে দেখো শতবার’। এতে সেই সন্তানের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্মাবে।
লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী
জেএমএস/এমএস