ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া এক নবীন ছাত্রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে মেইল করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা।
Advertisement
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এইচ এম আলী হাসান বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এক অভিভাবক তার ছেলেকে র্যাগিং করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করে আমার কাছে মেইল করেন। মেইলে তার ছেলের বিভাগ ছাড়া আর কোনো তথ্য উল্লেখ করা নেই। মেইলটি দেখার পর আমি প্রক্টরের কাছে পাঠিয়েছি।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ ৫ শিক্ষার্থী স্থায়ী বহিষ্কার
Advertisement
ওই অভিভাবক মেইলে লিখেছেন, গত সপ্তাহে আমার ছেলে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হয়। সেসহ আরও সাত আট জন নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অভিযুক্তরা তাদের শৃঙ্খলা শেখানোর নামে ডেকে নিয়ে তাদের দিয়ে ক্রিকেট খেলায় পানি সরবরাহ করানো, মা-বাবাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা, মোবাইল তল্লাশি করাসহ নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করে। এতে আমার ছেলে ভীষণ ভয় পেয়ে যায় এবং সে রাতে ঘুমাতে পারেনি। এখন আমি আমার ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবো কি না? এ বিষয়ে আপনার সাহায্য চাই।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছেলের বাবার সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছেলের সঙ্গে এমন একটা ঘটনা ঘটবে আমি ভাবতেই পারিনি। ঘটনার পর আমার ছেলে ও আমরা আতঙ্কে আছি। ক্যাম্পাসে আমার ছেলেকে দেখাশোনা করারও কেউ নাই। আমার ছেলের নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত কিছু বলতে চাচ্ছি না। দু-একদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবো।
আরও পড়ুন: অন্তরাসহ ৫ জনকে আজীবন বহিষ্কারের তথ্য হাইকোর্টে, শুনানি রোববার
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, মেইলটিতে ভুক্তভোগী ছাত্রের বিভাগ ছাড়া অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগীদের সম্পর্কে আর কোনো তথ্যই দেওয়া নেই। মেইলে দেওয়া অভিযোগকারীর নম্বরে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলেছি। তথ্য পেলে আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো। এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সভাপতিকেও জানানো হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
Advertisement
গত মাসেই দেশব্যাপী আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ২১ আগস্ট জরুরি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর উচ্চ আদালত বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাগিং বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে। কারও বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলেই তার ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
এ নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু দিন ক্যাম্পাসে মাইকিংও করা হয়। এরপরেও থামছে না র্যাগিং। ১ সপ্তাহ না যেতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রুমি নোমান/এসজে/এএসএম