দেশজুড়ে

অধ্যক্ষের সামনে অশালীন আচরণ, শিক্ষক বহিষ্কার

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষের সামনে অশালীন আচরণ করায় জাহাঙ্গীর আলম শাহীন নামের এক প্রভাষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

Advertisement

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এর আগে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম রেগে গিয়ে অধ্যক্ষের সামনে প্যান্টের বেল্ট খুলে জিপার খোলার চেষ্টা করছেন। এসময় উপস্থিত শিক্ষকরা তাকে নিবৃত করেন। পরে তিনি হাজিরা খাতায় সই করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

Advertisement

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সাচিবিক ও অফিস ব্যবস্থাপনা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কলেজে আসেন জাহাঙ্গীর আলম। অথচ সকাল ৯টায় আসার কথা শিক্ষক-কর্মচারীদের। পরে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে সই করার জন্য হাজির খাতা চান ওই শিক্ষক। এসময় তাকে উদ্দেশ করে অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, ‘আপনি যতটার সময় এসেছেন ততটার সময় সই করেন।’ এতে রেগে গিয়ে প্যান্টের জিপার খোলার চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক।

কলেজ সূত্র জানায়, গত ৬ আগস্ট অধ্যক্ষ সরওয়ার আলম কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলমকে। এতে বলা হয়, গত ২০ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত থেকে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন, যা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাবিরোধী। এছাড়া দৈনিক ক্লাস রুটিনে ক্লাস থাকা সত্ত্বেও আপনি ক্লাস করেন না। যে কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব না দিলে বিধি মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও কারণ দর্শানোর ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

Advertisement

ঘটনার সময় উপস্থিত সহকারী শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘কলেজে আসার সময় অনুযায়ী হাজিরা খাতায় সই করতে বলায় রেগে যান শাহীন স্যার। এরপর বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে প্যান্টের জিপার খোলার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু আমি তাকে বাধা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ক্রীড়া শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সময় শাহীন স্যার প্যান্টের বেল্ট ও হুক খুলে ফেলেন। একপর্যায়ে তিনি জিপার খোলারও চেষ্টার করেন। পাশাপাশি প্রিন্সিপাল স্যারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।’

এ বিষয়ে প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন বলেন, ‘আমার শরীরে পক্স (বসন্ত) উঠেছিল তাই আমি সাত দিন স্কুলে আসতে পারিনি। অধ্যক্ষর রুমে শার্ট ও প্যান্ট খুলে দাগ দেখাতে চেয়েছি। বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’

জানতে চাইলে মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

রবিউল হাসান/এসআর/এএসএম