ফরিদপুরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। শয্যা সংকটে হাসপাতালের ফ্লোর-বারান্দা, সিঁড়ির নিচে, খোলা চত্বর ও যাতায়াতের রাস্তায় চলছে চিকিৎসা।
Advertisement
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাজেদা বেগম (৫১) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বাহাদুর শেখের স্ত্রী। এ নিয়ে ফরিদপুরের এ হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৪ জন।
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এজন্য শয্যার বাইরেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রাজবাড়ী থেকে এসেছি। প্রথমে প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হলে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। পরে সেখান থেকে ফরিদপুরে পাঠিয়ে দেয়। গত দুই দিনেও এখানে বেড পাইনি। রোগীর প্রচণ্ড চাপ। কমছে তো না-ই, ঘণ্টায় ঘণ্টায় রোগী বাড়ছে। রোগীর চাপে হাসপাতালে সেবা মিলছে না।’
Advertisement
রোগী রাজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘গত চার দিনেও একটা বেড পাইনি। ফ্লোরে পড়ে আছি। এখানে কোনো ফ্যান নেই। গরমে কাহিল হয়ে গেছি। আবার দিনে-রাতে মশার কামড় তো আছেই। গরমে মশারি টাঙানোর মতো অবস্থাও নেই।’
সালমা বেগম নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, হাসপাতালের ফ্লোর, বারান্দা, সিঁড়ির নিচে কোথাও জায়গা খালি নেই। খোলা জায়গায় যে যেখানে জায়গা পাচ্ছেন সেখানেই চিকিৎসা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৮৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৫৪ জন।
তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। চার হাজার ৬০৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে।
Advertisement
এন কে বি নয়ন/এসআর/জিকেএস