সদ্য চালু হওয়া ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, বাইসাইকেলের মতো যান চলাচল করতে পারছে না। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই এসব ছোট যানবাহন চালকদের। তবে মোটরসাইকেল চালকদের আক্ষেপ যেন একটু বেশিই।
Advertisement
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে বহুল প্রতীক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে (ঢাকা উড়ালসড়ক) যান চলাচল শুরু হয়েছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যান চলাচল করছে। প্রথম দিনের সকাল থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেশি। এদিন একাধিক মোটরসাইকেল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার চেষ্টা করে। তবে র্যাম্প থেকে মূল সেতুতে ওঠার আগেই পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের বাধার মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন>> বাস চলাচল কম, ব্যক্তিগত গাড়ি বেশি
Advertisement
সকালে উত্তরা থেকে অফিসের কাজে গুলশান-২ যাচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী সুমন পারভেজ ও মতিউর রহমান। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে দ্রুত পৌঁছে যাবেন, এই চিন্তা করে এক ঘণ্টা দেরিতে বাসা থেকে বের হন তারা। কিন্তু পুলিশের বাধায় উড়ালসড়কটিতে উঠতে না পেরে আক্ষেপ ঝরে তাদের কণ্ঠে।
সুমন পারভেজ বলেন, ‘আমরা উত্তরা থেকে এসেছি, যাবো গুলশান-২ এ। উড়ালসড়ক ব্যবহার করে বনানী হয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বাসা থেকে দেরি করে বের হয়েছি, মনে করেছি উড়ালসড়ক ব্যবহার করে তাড়াতাড়ি যেতে পারবো। এখন এসে দেখি মোটরসাইকেল চলাচল নিষেধ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে না পারি তাহলে বাসা থেকে আরও আগেই বের হতে হবে। বাসা থেকে যদি আগের সময়ই বের হতে হয় তাহলে এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা তো আমরা ভোগ করতে পারলাম না।’
মতিউর রহমান বলেন, ‘মোটরসাইকেল চলতে পারলে ভালো লাগতো। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যাওয়ার একটা অভিজ্ঞতা হতো। আমরা দ্রুত যেতে পারতাম। দুর্ঘটনার কথা যেটা বলা হচ্ছে, সেটা তো হাইওয়েতেও হতে পারে। একটু সাবধানে চালালে মনে হয় না খারাপ হবে। প্রাইভেটকারেও দুর্ঘটনা হয়। দুর্ঘটনার কথা বলে আমাদের যেতে না দেওয়া উচিত না। তাড়াতাড়ি যেতে পারবো সেই আশায় বাসা থেকে লেট করে বের হলাম।’
Advertisement
খুলে দেওয়ার প্রথমদিনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যক্তিগত গাড়ির আধিপত্য দেখা যায়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কয়েকটি বাসকে উড়ালসড়ক ব্যবহার করতে দেখা গেছে। যার মধ্যে একটি বিআরটিসির যাত্রীবাহী বাস, আর দুটি সরকারি অফিসের কর্মীদের বহনকারী বাস। এছাড়া বেশকিছু কাভার্ডভ্যানও ব্যবহার করেছে উড়ালসড়কটি।
আরও পড়ুন>> এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরও বনানী-মহাখালীতে তীব্র যানজট
সকালে একাধিক সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল উড়ালসড়কে ওঠার চেষ্টা চালায়। তবে স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের বাধায় র্যাম্প পার হতে পারেনি যানগুলো।
স্বেচ্ছাসেবক নুর হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে মাত্র ২-৩টি বাস উঠেছে। প্রায় সবগুলোই সরকারি অফিসের বাস। অন্যবাস ওঠেনি। সিএনজি ও মোটরসাইকেল ওঠার চেষ্টা করছে। তবে আমরা তাদের নামিয়ে দিচ্ছি। তারা হয়তো জানে না, ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।’
মোটরসাইকেল চালক রিয়াদুল বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় এই পথে মোটরসাইকেল না চলতে দেওয়ার যুক্তি হাস্যকর। কেননা গাড়িও তো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের খারাপ লাগছে।’
তিনি বলেন, ‘যে গতি আছে সেই গতি আমরা মেইনটেইন করবো। দু/চারটা খারাপ চালকের জন্য আমরা বঞ্চিত হলাম।’
এসএম/ইএ/এমএস