দেশে প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। নির্বাচন কমিশন কয়েক দফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সে অনুযায়ী আজ সারাদেশের ৭৩২টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব ইউপিতে সোয়া কোটির বেশি ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করবেন। এজন্য কেন্দ্র রয়েছে সাত হাজার ৮৭টি। প্রথম ধাপের নির্বাচনে তিনটি পদে মোট প্রার্থী ৩৬ হাজার ৪৫৬ জন। এরমধ্যে ৫৪ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী তিন হাজার ৩৪ জন। সংরক্ষিত (নারী) সদস্য পদে প্রার্থী সাত হাজার ৫৭৫ জন। সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী ২৫ হাজার ৮৪৭ জন। এর মধ্যে সংরক্ষিত সদস্য ৫৪ জন এবং সাধারণ সদস্য ১৭৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক-এটাই সকলের প্রত্যাশা। অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া থেকে শুরু করে প্রচারণা পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিধি ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী বহু প্রার্থী। নির্বাচনে কমিশন অবশ্য বলছে সবকিছুই তাদের নজরে আছে। নিয়মভঙ্গ হলেই ব্যবস্থা। কিন্তু বাস্তবতা কি তা বলছে? নির্বাচনী সহিংসতায় এযাবৎ এগারজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো। এটি কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। তাছাড়া এ অবস্থা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। নির্বাচনী সহিংসতা আমাদের দেশে নতুন নয়। বিশেষ করে তৃণমূলের এই নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা বেশি থাকে। এ কারণে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ভূমিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। গোলযোগপূর্ণ কেন্দ্র গুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সাথে সাথেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো রকম শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় দলীয় প্রভাব খাটানোর আশঙ্কাও রয়েছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা যাতে বিশেষ কোনো সুবিধা না পায় নির্বাচন কশিশনকে সেটি দেখতে হবে। অন্য প্রার্থীরাও যাতে সমান সুযোগ পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে জালভোট, কেন্দ্রদখলসহ অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র স্থগিত, বাতিল কিংবা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় মূলত সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। এ জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার, সমর্থক, স্থানীয় প্রশাসন ও বিশেষ করে রাজনীতিক দলগুলোকেও যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সবাই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে-এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।এইচআর/পিআর
Advertisement