‘গত শনিবার ভর্তি হইছি। এখন পর্যন্ত সকালের নাস্তা অথবা ভাত কিছুই পাই নাই। একদিন ভাতের জন্য গেছিলাম কিন্তু ওই বুড়া ব্যাডায় যে খারাপ ব্যবহার করছে, সরমে আইয়া পড়ছি। পরে কয়ডা মুড়ি ভিজাইয়া খাইয়া ওষুধ খাইছি। হেইপর হইতে হোটেল দিয়া ভাত কিন্যা খাই।’
Advertisement
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ৬৫ বছর বয়সী রেণু বেগম এভাবেই হাসপাতালের খাবার সরবরাহ নিয়ে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে আংশিক রোগীরা খাবার পাচ্ছেন। আর বাকি রোগীদের বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। অনেক রোগী দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় বাইরে থেকে ওষুধ কেনার পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ করে খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আশা আশরাফ গাজী নামে এক রোগী জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও অনেক ওষুধ বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়। ওষুধ কেনার পাশাপাশি তিনবেলা বাইরে থেকে খাবার কিনে খাওয়াটা তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই দুপুরে বনরুটি আর সকালে মুড়ি খেয়ে ওষুধ খাচ্ছেন। গত চারদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তারা খাবার পাননি।
Advertisement
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মূলত ২৫০ শয্যা পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের অবকাঠামো এবং বরাদ্দ দিয়েই চলছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম। প্রতিদিন হাসপাতালে গড়ে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী ভর্তি থাকছেন। এসব ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে ২৫০ জন রোগী খাবার পাচ্ছেন আর বাকি রোগীরা খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা খাবারের মানও ভালো না। খাবার সরবরাহের দায়িত্বে খাকা ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেন।
এসব বিষয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমীন লিজা বলেন, আমরা মূলত ২৫০ জন রোগীর বিপরীতে যে বরাদ্দ থাকছে তা দিয়েই হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এর ফলে অনেক রোগীকে খাবার দেওয়া সম্ভব হয় না। বিষয়টি আমাদের জন্যও বিব্রতকর। তবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫০০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন এবং বরাদ্দ পেলে সকল রোগীকেই খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
এফএ/এমএস
Advertisement