টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুরু থেকেই দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচে স্বাগতিক ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী তারা। অপরদিকে ভারতের বিপক্ষে পরাজয়ের পর কোণঠাসা পাকিস্তান। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প নেই তাদের সামনে। এমন সমীকরণ সামনে নিয়ে মঙ্গলবার পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আইএস বিন্দ্রা স্টেডিয়ামে আত্মবিশ্বাসী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় মাঠে নামবে ভঙ্গুর মানসিকতার পাকিস্তান।এশিয়া কাপ থেকেই পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরা ভুগছিলেন আত্মবিশ্বাসের অভাবে। বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় জয় তুলে দুর্দান্ত প্রতাপেই বিশ্বকাপ শুরু করেছিল তারা। ব্যাটসম্যানরা ফর্মে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়ে দারুণ সংগ্রহ করেছিলেন; কিন্তু পরের ম্যাচেই আবারও ফুটে ওঠে তাদের দৈন্যদশা। আবারও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১১৮ রান করতে পারে তারা। আর এ সংগ্রহ তুলে নিতে তেমন কোন বড় পরীক্ষায় পড়তে হয়নি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের।অপরদিকে সেমিফাইনাল থেকে আর মাত্র একটি জয় দূরে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর আগে প্রথম ম্যাচে টুর্নামেন্ট ফেভারিট টিম ইন্ডিয়াকে পরাজিত করে ফর্মের তুঙ্গে থাকা নিউজিল্যান্ড ইতোমধ্যেই শিরোপার দাবীদার হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে।বরাবর পেসারদের উপর ভরসা করা নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা ভারতের টার্নিং উইকেটে দুর্দান্ত বোলিং করে ট্রাম কার্ড হয়ে উঠছেন। বলা হয়ে থাকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও স্পিন মোকাবেলা করতে পারে। অথচ প্রথম ম্যাচে বাঁ-হাতি স্পিনার মিচেল সান্তনার, লেগ স্পিনার ইশ সোধি এবং নাথান ম্যাককালামদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়েছেন তারা। ১০ উইকেটের নয়টি তুলে নিয়েছেন এ তিন স্পিনার। আইপিএলে নিয়মিত খেলার সুবাদে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন বাঁ-হাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার মিচেল ম্যাকক্লেনগানও।বিধ্বস্ত পাকিস্তানী ব্যাটিং লাইনআপকে আগামীকাল দারুণ পরীক্ষায় পড়তে হচ্ছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে শেহজাদ, হাফিজ ও আফ্রিদি ভালো ব্যাট করলেও পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ভেঙ্গে পড়েছেন। তবে বরাবরের মতই দুর্দান্ত বোলিং করে যাচ্ছেন পাকিস্তানী পেসাররা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় স্বল্প পুঁজি নিয়েও লড়ে যাচ্ছে তারা। ম্যাচের ভাগ্য দলের পেসাররাই বদলে দিতে পারেন। সাম্প্রতিক দারুণ ফর্মেও রয়েছেন মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ ইরফান, মোহাম্মদ সামি ও ওয়াহাব রিয়াজরা।তবে বোলিং ভালো হলেও ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা চলছে কিউইদের ব্যাটিংয়েও। ভারতের বিপক্ষে কোরি এন্ডারসন আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মার্টিন গাপটিল ছাড়া উল্লেখ করার মত সংগ্রহ করতে পারেননি কেউ। অধিনায়ক কেন উইলয়ামসন, কলিন মুনরো এবং গ্রান্ট ইলিয়টরা শুরুটা ভাল করেও ইনিংস বড় করতে পারছেন না। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের কোন ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি।মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য এগিয়ে আছে পাকিস্তান। ১৪ বারের মোকাবেলায় ৮ বার জয় পেয়েছে তারা। আর নিউজিল্যান্ড পেয়েছে ৬ বার। দুই দলের সর্বশেষ লড়াইয়ে অবশ্য পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়েছিল কিউইরা। সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্সে দারুণ এগিয়েই রয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে ক্রিকেটে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ দল হিসাবে খ্যাত পাকিস্তান যে কোন সময় যে কোন কিছুই করে ফেলতে পারে। তাই ক্রিকেট ভক্তরা একটি দারুণ লড়াইয়ের আশা করতেই পারেন।আরটি/আইএইচএস/বিএ
Advertisement