যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। ২ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বিমানবন্দরের কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে র্যাম্পসহ এ পথের মোট দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ কিলোমিটার। এই পথে যান চলাচল করবে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে। সেদিন থেকেই এ অংশে চলবে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার ব্যতীত অন্য যানবাহন।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরীর যানজট নিরসনে জাদুরকাঠি হিসেবে কাজ করবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক) প্রকল্প। চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল লেনের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি ছুটবে নগরবাসীর স্বপ্নের এ প্রকল্পে। যখন পুরো উড়ালসড়ক খুলে দেওয়া যাবে তখন বিমানবন্দর থেকে মাত্র ২০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে যাত্রাবাড়ী। ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ গেটের সংযোগ হবে এক্সপ্রেসওয়ে। তবে একাংশ খুলে দেওয়ার কারণে এখনই এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পুরো সুফল মিলবে না।
ঢাকা শহরে এখন দিনে মালবাহী ট্রাক চলাচলে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে ঢাকার অদূরে এসব যানবাহনকে অপেক্ষা করতে হয়। উড়ালসড়ক উদ্বোধন হলে নারায়ণগঞ্জ থেকে গাজীপুর বা গাজীপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ হয়ে দিনের যেকোনো সময়, যেকোনো গন্তব্যে সহজেই চলাচল করা যাবে। কারণ এটি একটি বিকল্প রুট।
আরও পড়ুন: এক্সপ্রেসওয়ে-মেট্রোতে সরাসরি যুক্ত হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল
Advertisement
সেতু বিভাগ জানায়, সরকার জনদুর্ভোগ নিরসনসহ নানান কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ অংশের সংযোগ ও ট্রাফিক ধারণক্ষমতা বাড়ানো। যাত্রার সময় কমিয়ে ভ্রমণ আরামদায়ক করা, উত্তর ও দক্ষিণ গেটওয়ের সংযোগ উন্নত করা, এশিয়ান হাইওয়ে করিডোরে উন্নত পর্যায়ের সেবা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংযোগ উন্নত করা। এছাড়া যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন, যোগাযোগ ব্যয় ও যানবাহন পরিচালন খরচ কমাবে এ প্রকল্প।
দেশের অর্থনৈতিক প্রভাবসহ প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমবে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ বাঁচবে। সার্বিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজীকরণ ও আধুনিকায়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে এ প্রকল্প।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, উড়ালসড়ক বাস্তবায়নের পর ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক সৃষ্টি হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি হেমায়েতপুর-কদমতলী-নিমতলী-সিরাজদিখান-মদনগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-মদনপুরে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।
আরও পড়ুন: চলতি বছরেই চালু হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
Advertisement
উড়ালসড়ক শুধু বিমানবন্দর ও যাত্রাবাড়ী রুটের যাত্রীদেরই স্বস্তি দেবে না। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চল এবং পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করতে সহায়তা করবে। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা যানবাহনগুলো ঢাকাকে বাইপাস করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে। এতে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অংশে নিরসন হবে যানজট।
এমওএস/এমএইচআর/এএসএম